পঞ্চায়েত নির্বাচনের ট্রায়াল বলছেন বিরোধীরা 

ব্যালটের জন্য ধাক্কাধাক্কি মঞ্চে 

সাহেবগঞ্জ, সংবাদ একলব্যঃ 


মানুষের পঞ্চায়েত  তৈরি হবে। আপনারা কাকে প্রার্থী চান সেটা জানতে এসছি। এভাবেই সাহেবগঞ্জের জনসভায় জানালেন অভিষেক। আর এইজন্যই ব্যবস্থা হয়েছিলো গোপন ব্যালটের। যেখানে সাধারন মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে জানাতে পারবেন। কিন্তু অভিষেক মঞ্চ ছাড়তেই ভোট বাক্স নিয়ে তুলকালাম, ব্যালট লুঠ থেকে হাতাহাতি । হাতাহাতির সময় মঞ্চ থেকে পরে গিয়ে আহত হলেন সাংবাদিক। বিরোধীরা  বলছেন পঞ্চায়েতের ট্রায়াল । 

মঞ্চথেকে পরেগিয়ে আহত সাংবাদিক




দেখা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা মঞ্চ থেকে নেমে যাবার পর মাঠের কিছুটা দূরে ভেঙে পড়ে রয়েছে ব্যালট বক্স। ব্যালট পেপার না পেয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে ব্যালট বক্স এমনটাই দাবি করছেন তৃণমূলের নিচুতলার কর্মী সমর্থকরা। 

পছন্দের প্রার্থীর নাম জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ 

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাহেবগঞ্জের সভা মঞ্চ থেকে নিজের বুথে প্রার্থী বাছাই করার জন্য ভোট প্রদানের প্রক্রিয়া চালু করেন ব্যালট বক্সের মাধ্যমে। কর্মীদের অভিযোগ ব্যালট পেপার না পেয়ে কিছু কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ব্যালট বাক্স ভেঙে দেন। এরপরেই ক্ষোভ জন্মায় কর্মীদের মধ্যে। 

এরপর গোসানিমারীতে দ্বিতীয় জনসভা করার পর অভিষেক মঞ্চ ছাড়ার পরেই সভামঞ্চে ব্যালট বাক্স নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। 

এই নিয়ে বিজেপি নেত্রী লকেট চ্যাটার্জী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর সভার প্রথম দিনে ব্যালট লুট করার বিষয় প্রসঙ্গে  দাবি করলেন এটা পঞ্চায়েত ভোটের একটা রিহার্সেল হল যা দেখে গ্রামীণরা বুঝতে পারছেন যে কিরূপ তৃণমূল দল ভোট লুট করতে হয় তার ট্রেনিং দিচ্ছেন। 

এদিন সাহেবগঞ্জের সভা থেকে অভিষেক বলেছিলেন, আগামীদিনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে নিজের পঞ্চায়েতের কথা ভেবে করবেন। পঞ্চায়েতের আগে ১৯ সালে গ্রামের রাস্তা পানিয়জলের কথা ভেবে কেউ ভোট দেননি। ১০০ দিনের কাজ সামনে রেখে ভোট দেননি। আগামী পঞ্চায়েতে কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগ নয়, বালাকোটের নামে নয়, ৫৬ ইঞ্চির ছাতির জন্য নয়, বাংলার দাবি দিল্লির বুক থেকে ছিনিয়ে আনতে ভোট দিতে হবে। বাংলাকে যারা বঞ্চিত অত্যাচারিত করছে তাদের জন্য নিজের অধিকার ছিনিয়ে আনতে ভোট দিতে হবে। তৃণমূল বলছে নিজের ভোট নিজে দেবেন তো বটেই। নিজের প্রার্থী বেছে নিন । 


পছন্দের প্রার্থীর নাম জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ 


এদিন তিনি বলেন- ২০২৬ পর্যন্ত সরকার আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩ বার মুখ্যমন্ত্রী। আবার চতুর্থবার জিতবেন । কিন্তু পঞ্চায়েতে মানুষের প্রতিনিধি না থাকলে সেখানে পরিষেবা বাধা পাবে। শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অবাধ নির্বাচন হোক। তার জন্য প্রার্থী তৃণমূল ঠিক করবে না। আপনারা যাকে প্রার্থী ঠিক করবেন দলের সর্ব শক্তি দিয়ে তাকে জিতিয়ে আনা হবে। আপনার প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করবে না, দলের কেউ ঠিক করবে না। আপনি ঠিক করবেন। গঠনশিল প্রগতিশীল উন্নয়নমূলক পঞ্চায়েত গঠন করবেন


পছন্দের প্রার্থীর নাম জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ 



অভিষেক বলেন- আমাদের দরকার ছিল না। কিন্তু মানুষের পাশে এসছি তার কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিলে রাখে। কিছু মানুষ বলেছিল অভিষেক বলেছিল কিন্তু কাজে হবে তো? সেটাই যাতে হয় তার জন্য এসছি । 


এদিন প্রতিটি সভায় ব্যালট পেপার দেওয়া হয়। অভিষেক বলেন- এটা গোপন ব্যালট। যাকে প্রার্থী চান ব্যালট বাক্সে নাম লিখে ফেলে দিন। ৩৩৪৩ টা পঞ্চায়েত রয়েছে বাংলায়। সব জায়গায় যাব। মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে ছাড়ব। যাতে পরিষেবা আপনার দুয়ারে যায়। আপনাকে পঞ্চায়েতের দুয়ারে যেতে না হয় যারা ভোট দিয়েছে তাদের জন্যও কাজ করতে বদ্ধ পরিকর। যারা দেয়নি তাদের জন্যও কাজ করতে বদ্ধ পরিকর মানুষ যাকে সার্টিফিকেট দেবে সেই প্রার্থী হবে। নির্ভয়ে নির্দ্বিধায় ভোট দেবেন।

কিন্তু অভিষেক চলে যেতেই কোথাও ক্ষোভে ব্যালট বাক্স ভাঙ্গা অবস্থায় পাওয়া গেলো তো কোথাও ব্যালটের জন্য হাতাহাতিও চললো খোলা মঞ্চে। এই বিষয়ে অভিষেক বলেছে "গায়ের জোরে ব্যালট বক্স ভেঙে প্রার্থী নির্বাচন করতে চাইলে তিনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।"