দুর্গোৎসবের দিনেও চাকরি প্রার্থীদের চোখের জলের সাক্ষী বাংলা




দুর্গোৎসবের দিনেও চাকরি প্রার্থীদের চোখের জলের সাক্ষী হয়ে রইল বাংলা। দুর্গোৎসবের দিন গুলিতে দুই ভিন্ন ধরনের দৃশ্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্তের সৃষ্টি করেছে।


যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানিয়েছেন যে, রাজ্য জুড়ে একদিকে মহাসমারোহে দুর্গোৎসব বাংলার ঘরে ঘরে খুশিতে ভরিয়ে তুলেছে। পূজা মন্ডপ গুলিতে জগৎ জননী দুর্গা মায়ের আরাধনা চলছে। মানুষেরা দেবী প্রতিমা দর্শনের জন্য পূজা মন্ডপ গুলিতে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চারিদিকে বিভিন্ন ধরণের আলোকসজ্জায় পূজা মন্ডপ গুলি সেজে ওঠেছে। অন্যদিকে আমরা ভীষণ অসহায়। বুকভরা ব্যথা আর চোখের জল নিয়ে ধর্ণায় বসে আছি। আমাদের ঘরের দুর্গারা আজও ফুটপাতে ধর্ণায় বসে ন্যায্য চাকরির দাবিতে লড়ছে। আমরা দুর্নীতির কবলে পড়ে জীবন যন্ত্রণায় ভুগছি। খুবই কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে আমাদের ধর্ণারত বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের প্রতিটি দিন।যাদের চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার ছিল, তারা আজ বঞ্চিত হয়ে ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনার জন্য ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যারা সমাজ গঠনের কারিগর আজ তারা চোখের জলে ভাসছেন।


কবে বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরে পাবেন- সেই প্রশ্নই এখন তাদের। নবম -দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের রাজ্য নেতৃত্ব সুদীপ মন্ডল মহামান্য হাইকোর্ট এবং সরকারের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছেন,যে নবম- দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরি থেকে বঞ্চিত সকল যোগ্য শিক্ষক-্শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগের সুব্যবস্হা করা হোক। তাদের জীবন থেকে মূল্যবান ছয়টি বছর নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাদের প্রতি এবার অন্তত ন্যায়বিচার করা হোক। বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অধিকাংশই রাজ্যের সাধারণ কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, খেটেখাওয়া অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবার গুলির সন্তান। সেই পরিবার গুলির স্বপ্ন আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের ক্রমাগত দুর্নীতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উক্ত পরিবার গুলির স্বপ্ন ভেঙে দিতে। মেধাতালিকায় সামনের দিকে থেকেও চাকরিতে নিয়োগপত্র পাননি উক্ত পরিবার গুলির যোগ্য চাকরি প্রার্থীগণ। অথচ মেধাতালিকায় অনেক পিছনের দিকে থাকা বহু চাকরি প্রার্থীদের অবৈধভাবে নিয়োগ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। মেধাতালিকায় নাম নেই এমন ফেলকরা বহু প্রার্থীদের দুর্নীতি করে নিয়োগ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক। কিন্তু যাদের নিয়োগ অগ্রাধিকার ছিল,যারা যোগ্য, তাদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয়নি। তারা ৫৬৭ দিন ধরে কলকাতার বুকে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্ণায় বসে চোখের জলে ভেসে যাচ্ছেন আর বুকভরা ব্যথা নিয়ে ছটফট করছেন।


দুর্গোৎসবে মানুষেরা খুশি মনে নতুন বস্ত্র পরিধান করে দেবী প্রতিমা দর্শনের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পুরাতন বস্ত্রে কলকাতার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্ণায় বসে এই পশ্চিমবঙ্গের বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীগণ বুকভরা যন্ত্রণায় , চোখের জলে আর্তনাদ করছেন। কেউ তো বোঝেনা ওদের ব্যথা ,কেউ রাখেনি কথা।


পূজার দিনগুলিতে যখন সবাই উৎসব আনন্দে মুখরিত ঠিক তখন ধর্ণা মঞ্চ স্লোগানে মুখরিত হচ্ছে - "পাঁচশো টাকার লক্ষ্মীর ভান্ডার রইল ঘরে পড়ে। ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনতে আজ লক্ষ্মীরা পথের ধারে।" ফেলকরাদের চাকরি হলো কমিশনের হাতে। যোগ্যরা বঞ্চিত হলো চাকরিতে আর ভাতে।"