২০১৪ এবং ২০১৭ এর লড়াইয়ে ঝুলবে না তো ২০২২ এর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা !

tet 2022



শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নাজেহাল সরকার যখন স্বচ্ছভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে উঠেপরে লেগেছে, তখন কিছুতেই যেনো সমস্যার জট ছাড়তেই চাইছে না। ইতিমধ্যে ২০২২ এর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য অনুষ্ঠিত হতে চলা টেট পরীক্ষা নিয়ে একাধিক বিজ্ঞপ্তি জারি করতে দেখা যাচ্ছে। একটা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেই তৈরি হচ্ছে প্রশ্ন। তবে এর থেকেও বড় এক সমস্যা রয়েছে যা ২০২২ এর আসন্ন টেট পরীক্ষাকে (TET-2022) ঝুলিয়েও দিতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।




২০১৪ ও ২০১৭-র প্রাথমিকের টেট (Primary TET) পাশ চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা বর্তমানে সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে । ২০১৪-র চাকরিপ্রার্থীদের দাবী তাঁরা ২০১৭-র টেট পাশেদের সঙ্গে নিয়ােগ প্রক্রিয়ায় বসতে রাজি নন। প্রয়ােজনে মামলায় যাবেন। অপরদিকে ২০১৭-র টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীরাও জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরাও ২০১৪-র টেট পাশেদের সঙ্গে নিয়ােগ প্রক্রিয়ায় বসতে অনিচ্ছুক। প্রয়ােজনে তারাও মামলা করবেন। আর যদি এই বিবাদ সত্যি সত্যিই আদালত পর্যন্ত গড়ায় তবে আশঙ্কা থমকাতে পারে নতুন টেট পরীক্ষা (TET 2022)।


কিন্তু কেন এই বিবাদ ? কি দাবী ২০১৪ এবং ২০১৭ এর টেট পাশ চাকরীপ্রার্থীদের ?


২০১৪-র প্রশিক্ষিত টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীদের অভিযােগ, তাঁদের জন্য যে শূন্যপদ রয়েছে তা এখনও পূরণ হয়নি। তা হলে কেন তাদের নতুন নিয়ােগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে বলা হচ্ছে? তাদের আশঙ্কা, একসঙ্গে নিয়ােগ প্রক্রিয়া শুরু হলে তারা ২০১৭ সালের টেট পাশেদের থেকে অ্যাকাডেমিক স্কোরে পিছিয়ে পড়বেন। কারণ, ২০১৭-র টেট পাশেরা নতুন পাঠ্যক্রমে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে নম্বর বেশি পেয়েছেন। ফলে অ্যাকাডেমিক স্কোরের নিরিখে ২০১৪-র প্রার্থীদের চাকরির সুযােগ কমে যাবে।


অপরদিকে ২০১৭-র টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীদের অভিযােগ, ২০১৪-র টেট পাশেরা ইতিমধ্যেই দু’বার ইন্টারভিউ দিয়ে ফেলেছেন। অথচ তারা গত ছ'বছর ধরে বসে থেকে এখনও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সুযােগ পাননি।


২০১৭-র টেট পাশ ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক সাহারুপ আলম আননন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “১১ হাজার নতুন যে নিয়ােগ হবে, সেখানে ২০১৪-র টেট পাশেদের সুযােগই দেওয়া উচিত নয়। কারণ, ইতিমধ্যে দু'দফায় ২০১৪-র টেট পাশেদের মধ্যে ৬০ হাজারের বেশি নিয়ােগ হয়ে গিয়েছে। অথচ আমরা এখনও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণই করতে পারিনি। এ বার নতুন নিয়ােগে শুধু ২০১৭-র প্রার্থীদের সুযােগ দেওয়া হােক।”


পুরনাে পাঠ্যক্রমের জন্য ২০১৪-র প্রার্থীদের অ্যাকাডেমিক স্কোর কম থাকার অভিযােগের জবাবে সাহারুপদের দাবি, তাদের সবাই যে নতুন পাঠ্যক্রমে পাশ করে এসেছেন, এমন নয়। অনেকেই আগের পাঠ্যক্রমে পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন। তাঁদেরও অ্যাকাডেমিক স্কোর কম থাকবে।


তবে উভয় চাকরিপ্রার্থীরাই একটি বিষয়ে একমত যে, নতুন নিয়ােগ প্রক্রিয়ায় ২০১৪ এবং ২০১৭-কে মিশিয়ে দিয়ে অযথা জটিলতা তৈরি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তবে অপরদিকে পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের কথায়, “যে নিয়ােগ প্রক্রিয়া হচ্ছে, তা ১০০ শতাংশ নিয়ম মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গেই হচ্ছে।”


ফলে ২০১৪ এবং ২০১৭ এর টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীদের লড়াই এখন কোন পর্যন্ত গড়ায়, তার উপর নির্ভর করবে ২০২২ এর টেট পরীক্ষার ভবিষ্যৎ , এমনটাই চাকরীপ্রার্থী সহ অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।