Presidential Election 2022: রাইসিনা হিলসের দৌড়ে দ্রৌপদী-যশবন্ত, টান টান উত্তেজনা 


Presidential Election



18 ই জুলাই দেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন (Presidential Election)। রামনাথ কোবিন্দের (Ramnath kovind) পর দেশের রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন কে এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে ব্যস্ত দেশবাসী? ইতিমধ্যে বিজেপি তরফে এন ডি এ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মুর (Draupadi Murmu) নাম ঘোষণা করা হয়েছে অন্যদিকে বিরোধী বেশ কয়েকটি দলের জোট প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হয়েছেন যশবন্ত সিনহা (Yaswant Sinha)। শরদ পওয়ার থেকে ফারুখ আবদুল্লা এবং সর্বোপরি গোপালকৃষ্ণ গাঁধী, রাষ্ট্রপতি হওয়ার (Presidential Election 2022) দৌড়ে যেতে রাজি হননি কেউই শেষ পর্যন্ত বিরোধী শিবিরের প্রার্থী করা হয়েছে যশবন্ত সিনহাকে। 



আগামী ১৮ই জুলাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এদিকে ২৪শে জুলাই রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ রামনাথ কোবিন্দের। ২১শে জুলাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গণনা। দ্রৌপদী ও যশবন্ত সম্মুখ লড়াইয়ে।রাইসিনা হিলের দৌড়ে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও, দ্রৌপদী এবং যশবন্তের মিলও রয়েছে। দীর্ঘ ছ'বছর ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল ছিলেন দ্রৌপদী। আবার ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন যশবন্ত। 


১৯৬০ সালে IAS অফিসার হিসেবে কাজে যোগ দেন যশবন্ত সিনহা। দীর্ঘ চব্বিশ বছর সামলেছেন দেশের প্রশাসনিক দায়িত্ব। এরপর ১৯৯০ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী ছিলেন। অটলবিহারি বাজপেয়ীর আমলেও ১৯৯৮ সালের মার্চ থেকে ২০০২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলান। ২০০২ সালের জুলাই মাস থেকে ২০০৪ সালের মে মাস পর্যন্ত বিদেশমন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর জামানায় বিজেপির মধ‍্যে মত পার্থক‍্যের জেরে ধীরে ধীরে কোনঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০২১-এ যোগদেন তৃণমূলে। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর এবার ২০২২-র ২১শে জুন তৃণমূল থেকেও ইস্তফা দেন তিনি, কারণ, জোট তাঁকেই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ক‍রেছে। বিরোধী জোটের রাষ্ট্রপতি হিসেবে যশবন্ত সিনহার নাম প্রস্তাব করেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ‍্যায়। ২০২২-র রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী যশবন্ত সিনহা।


পৃথক ঝাড়খণ্ডের প্রথম পূর্ণমেয়াদি রাজ‍্যপাল দ্রৌপদী মুর্মু এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। শিক্ষিকা হিসেবে কর্মজীবনের সূচনা তাঁর। ১৯৯৭ সালে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান করেন তিনি।  ওড়িশায় জনজাতি নেত্রী হিসেবে সুপরিচিত তিনি। ২০০০ সালে পৃথক ঝাড়খণ্ডের দ্রৌপদীই প্রথম পূর্ণমেয়াদি রাজ্যপাল। ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পদে টিকে ছিলেন তিনি। ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলা বিজেপি-র সভাপতি পদ সামলেছেন দ্রৌপদী মুর্মু। একেবারে অপ্রত্যাশিত ভাবেই তাঁর নাম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মনোনীত করে এনডিএ, যার পর ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দলও ভূমিকন্যা দ্রৌপদীকে সমর্থন জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। 


How is the President of India elected?

ভারতের নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা করে। ভারতের রাষ্ট্রপতি পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন যাকে ইলেক্টোরাল কলেজ বলে। ইলেক্টোরাল কলেজ সংসদীয় এবং রাজ্য-স্তরের আইন প্রণেতাদের নিয়ে গঠিত। এই বছরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে, 776 জন সংসদ সদস্য সহ প্রায় 4,900 জন আইনপ্রণেতা ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবেন।



ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আনুপাতিক ভোটিং নামে একটি পদ্ধতি মেনে চলে। এর অর্থ হল একজন সাংসদ বা বিধায়কের প্রতিটি ভোটের মূল্য 1-এর বেশি। প্রতিটি ভোটের মূল্য সংশ্লিষ্ট জনসংখ্যার উপর নির্ভর করে রাজ্য থেকে রাজ্যে পরিবর্তিত হয়। ভোটের মূল্য গণনার একটি সূত্র আছে। একজন সংসদ সদস্যের প্রতিটি ভোটের নির্দিষ্ট মূল্য হল 708। কোনো নির্দিষ্ট রাজ্যে প্রতিটি ভোটের মূল্য বের করতে, রাজ্যের জনসংখ্যাকে তার বিধানসভায় বিধায়কের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করুন, তারপর ভাগফলকে 1000 দিয়ে ভাগ করুন। উত্তরপ্রদেশ, সর্বাধিক সংখ্যক বিধায়ক সহ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য, ব্যক্তিগত ভোটের সর্বোচ্চ মূল্য (208)।



ভোট দেওয়ার পরে বিজয়ী নির্বাচন করার জন্য একটি বিস্তৃত ব্যবস্থাও রয়েছে। নিয়মিত নির্বাচনের বিপরীতে, একটি সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অর্থ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ী নয়। বিজয়ী প্রার্থীকে অবশ্যই মোট ভোটের 50 শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে। এছাড়াও, একজন ভোটার শুধুমাত্র একজন নেতাকে নির্বাচন করেন না তবে বিশেষভাবে মুদ্রিত ব্যালট পেপারে পছন্দের ক্রমে ভোট দেন।



দ্রৌপদী মুর্মু সমস্ত এনডিএ-অনুষঙ্গী দলগুলির দ্বারা সমর্থিত এবং যশবন্ত সিনহাকে বিরোধী দলগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন করে৷ প্রাথমিক ভবিষ্যদ্বাণী এবং গণনা অনুসারে, মুর্মু 60 শতাংশের বেশি ভোট পেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে এবং নির্বাচনে আরামদায়ক জয় ছিনিয়ে নিতে পারে। যদিও ভোট গণণা হয়নি এখনো। চূড়ান্ত ফলাফলে কে জয়ী হবে সেটা সময়ের অপেক্ষা।