বাঁকুড়ায় শিক্ষকের অভাবে বিদ্যালয়ে ঝুলছে তালা,স্কুলজুড়ে শ্মশানের স্তব্ধতা


School



রঞ্জিত ঘোষ,বাঁকুড়া :



শিক্ষকের অভাবে বিদ্যালয়ের দরজায় ঝুলছে তালা। অগত্যা শিশুদের বিদ্যালাভে ছুটতে হচ্ছে ছয় কিলোমিটার দূরের বিদ্যালয়ে। কেউবা আবার হয়ে পড়েছে বিদ্যাবিমুখ।ঘটনা বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের অন্তর্গত অঙ্গদপুর জুনিয়র হাই স্কুলের।



শিক্ষা যেখানে সমাজের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেখানে মানুষ গড়ার কারিগর এর অভাবে বন্ধ হয়ে গেল বিদ্যালয়। এ এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকলো বাঁকুড়ার এক গ্রাম। আছে আস্ত একটা স্কুলের পরিকাঠামো, আছে সারিবদ্ধ ভাবে বেঞ্চ সাজানো কিন্তু নেই কোন শিক্ষক তাই বন্ধ হলো বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি করোণা আবহ থেকে দু'বছর ধরে সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। উল্লেখ্য অতিথি শিক্ষক দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল বিদ্যালয়টির পঠন পাঠন কিন্তু সেই সমস্ত শিক্ষকদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই আসেনি আর কোনো শিক্ষক। ফলে শিক্ষক সংকটে বিদ্যালয়ের দরজায় পড়ে তালা,যা আজও বন্ধ। অঙ্গদপুর জুনিয়র হাই স্কুলের এহেন অবস্থায় হতবাক সকলে। অত্যন্ত আড়ম্বরের সাথে প্রশাসনিক কর্তাদের হাতে ২০১৫ সালে উদ্বোধন হয়েছিল এই স্কুলের। প্রথমদিকের শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছিল তিনজন অতিথি শিক্ষক মশাই ও তাদের সঙ্গে জনা ৬০ ছাত্রকে নিয়ে এই বিদ্যালয়ের পথ চলা । ধীরে ধীরে বেড়েছিল ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাটাও। কিন্তু এখন তা অতীত। শিক্ষক নেই তাই বিদ্যালয় এখন বন্ধ । ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অঙ্গদপুরসহ আরো দু -তিনটি গ্রামের পড়ুয়াদের। বাধ্য হয়েই পড়ুয়াদের স্থানান্তরিত হতে হচ্ছে পার্শ্ববর্তী লোদনা মানখামার বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরে।এছাড়াও কেউ কেউ আবার হয়ে পড়ছে বিদ্যাবিমুখ । দীর্ঘ ছয়মাস যাবৎ একই চিত্রের সাক্ষী পুরো গ্রাম। এই গ্রাম থেকে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ছয় থেকে সাত কিলোমিটার, তার জেরে প্রত্যহ স্কুলে পৌঁছাতে অনেকটাই বেগ পেতে হয় পড়ুয়াদের।




স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর দাস ও মনসারাম ঘোষ জানান , একাধিক বার বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও এখনো পর্যন্ত হয়নি কোন সুরাহা। এই বিষয়ে স্থানীয় ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন সবার দরবারে গেলেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন কর্তারা।




অন্যদিকে শুক্রবার এবিষয়ে জেলা শিক্ষা দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।




তবে আদৌ শুরু হবে কি পাঠশালা, আদেও কি বিদ্যালয়ের ভূতের নিস্তব্ধতা কাটিয়ে কচিকাঁচাদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠতে দেখা যাবে এই শিক্ষাঙ্গনকে, সারাগ্রাম কি ফিরে পাবে তাদের স্বপ্নের এই পাঠশালাকে? এটাই এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে।