ভারতের স্বাধীনতার দাবীতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ লেখা

ভারতের স্বাধীনতার দাবীতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ লেখা


rabindra nath



সময়টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের । ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দাবানলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে মানবসভ্যতা। পূর্ব থেকে পশ্চিম আর উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র বাজছে যুদ্ধের দামামা। কেউ লড়ছে গণতন্ত্র রক্ষায়, কেউ নিজ ভূখণ্ড রক্ষায়, আবার আগ্রাসী শক্তি ধ্বংসলীলায় মত্ত একের পর এক দেশ জয়ের নেশায়।

(ads1)

এমনি এক প্রেক্ষাপটে তৎকালীন ব্রিটিশ-শাসিত ভারতবর্ষে স্বাধীনতার আওয়াজ তীব্র থেকে তীব্রতর হতে লাগলো। ব্রিটিশের কাছে স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি চাইতে লাগলো ভারতের একটা অংশ। এই চাওয়াকে তীব্র ভর্ৎসনা করলো মিস রাথ্‌বোন। মিস রাথ্‌বোন ভারতীয়দের তথা জওহরলালের তীব্র নিন্দা করে একটি প্রবন্ধ লিখলেন। তাঁর বক্তব্য, "এই ভারতই পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে ব্রিটিশদের জন্য। আর আজ তাঁদেরই মারছে! বিশ্বযুদ্ধে ইংল্যান্ডের সঙ্গে যোগ দিতে অস্বীকার করছে! এ কেমন প্রতিদান…"


(ads2)

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মিস রাথ্‌বোনের এই লেখার তীব্র প্রতিবাদ জানালেন মৃত্যু পথযাত্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। লিখলেন দীর্ঘ এক প্রবন্ধ। কৃষ্ণ কৃপালিনী দায়িত্ব নিলেন রবীন্দ্রনাথের কথা লিপিবদ্ধ করার। খোলা চিঠির বিপরীতে খোলা চিঠিই হবে এর উত্তর। ১৯৪১-এর ৫ জুন, ভারতের সমস্ত ইংরেজি সংবাদপত্রে ছাপা হল সেই চিঠি— রবি ঠাকুরের প্রতিবাদপত্র।




রবীন্দ্রনাথ লিখলেন “ভারতীয়দিগকে লিখিত মিস রাথবোনের খোলা চিঠি পড়িয়া আমি গভীর বেদনা অনুভব করিয়াছি। …তাঁহার এই পত্র প্রধানত জওহরলালের উদ্দেশ্যেই লিখিত এবং একথা আমি নিঃসন্দেহে বলিতে পারি, মিস রাথবোনের দেশবাসীগণ আজ যদি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই মহানুভব যোদ্ধার কণ্ঠ কারাপ্রাচীরের অন্তরালে রুদ্ধ না রাখিত, তাহা হইলে তিনি মিসের এই অযাচিত উপদেশের যথাযোগ্য ও সতেজ উত্তর দিতেন। বলপ্রয়োগজনিত তাঁহার মৌন আমাকেই, রোগশয্যা হইতেও, এই প্রতিবাদ জানাইতে বাধ্য করিয়াছে।…”


(ads1)

দীর্ঘ এই প্রতিবাদ লেখার পর মাঝে মাত্র ১ টা মাস, তারপর এলো সেই বিষাদের দিন, ৭ আগস্ট, ২২ শ্রাবণ। আকাশের বুকে পুঞ্জিত কালো মেঘ বেয়ে নামলো অশ্রুধারা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ