বাঙালীর গর্ব, বাঙালীর অহঙ্কার শতবর্ষে উপনীত ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয়





শিক্ষার সর্বোচ্চ উত্‍কর্ষের মানদণ্ডে বরাবর উপরের সারির এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয় শতবর্ষে উপনীত হল শিক্ষা-সাংস্কৃতিকে ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশের সব চেয়ে প্রাচীন বিশ্ব বিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়। ১৯২১-র ১ লা জুলাই অবিভক্ত ভারতের ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয় (University of Dhaka)। 




১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের ব্রিটিশ সিদ্ধান্ত ১৯১১ সাল নাগাদ পরিত্যক্ত হলেও তার পর থেকেই পূর্ব বাংলার কিছু মানুষ তাঁদের নিজস্ব একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনে মনে চাইছিলেনই। ঢাকার নবাব খাজা সালিমুল্লাহ বাহাদুরের নেতৃত্বে একদল মুসলিম মানুষ একটি বিশ্ব বিদ্যালয়ের জন্য ব্রিটিশদের কাছে আবেদন করেন। লর্ড কার্জন সেই আবেদনে সায় দিয়ে ঢাকায় বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষনা করেন। নবাব খাজা সালিমুল্লাহ বাহাদুরের এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলায় পথিকৃতের ভূমিকা পালন করলেন। 




বর্তমান বাংলাদেশ (Bangladesh) নামে পরিচিত দেশের রাজধানী ঢাকায় এই বিশ্ববিদ‍্যালয় থাকলেও এপার ওপার দুই বাংলার সম্পর্ক নিবিড়। ১৯৩৬ সালে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় সাম্মানিক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করল জগদীশচন্দ্র বসু, যদুনাথ সরকার, শরত্‍চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। বুদ্ধদেব বসু এই বিশ্ববিদ‍্যায়ে আলোড়ন ফেলে বেরিয়ে আসেন। এছাড়াও এই তালিকায় কবি অজিত দত্ত। অর্থনীতিবিদ ও পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থমন্ত্রী তথা অধ্যাপক অশোক মিত্র। মনস্বী ভবতোষ দত্ত। 




এখানে পড়াতেন, তাঁরা সব জ্যোতিষ্ক। সত্যেন্দ্রনাথ বসু, রমেশচন্দ্র মজুমদার, যদুনাথ সরকার, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, মোহিতলাল মজুমদার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই বিশ্ববিদ‍্যালয়েই পড়াশুনা করেছেন। এককথায় বহু উজ্জ্বল প্রতিভাবন ব‍্যাক্তির জন্ম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয়। 




তিনটি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৬০ শিক্ষক, ৮৪৭ শিক্ষার্থী এবং তিনটি আবাসিক হল নিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আজ যার পরিসার বিরাট আকার ধারন করেছে। ১৩টি অনুষদ, ৮৪টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ১৯৮৬ জন শিক্ষক, প্রায় ৪৭ হাজার শিক্ষার্থী এবং ১৯টি আবাসিক হল ও ৪টি হোস্টেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে । এছাড়াও রয়েছে দেড় শতাধিক বিভিন্ন একাডেমিক ঘরানার অধিভুক্ত এবং উপাদানকল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।




সময়ের কণ্ঠস্বর সংবাদ মাধ‍্যম থেকে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শুভানুধ্যায়ীসহ সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।




কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রেখে মূল অনুষ্ঠানের অগ্রবর্তী অনুষ্ঠান হিসেবে আজ সীমিত পরিসরে প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ এ দিবসটি উদযাপন করা হয়।নানাবিধ আয়োজনের মাধ্যমে শতবর্ষের মূল অনুষ্ঠান আগামী ১ নভেম্বর বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।