জল্পনার অবসান, তৃনমূলেই ফিরলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়




সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূলে ফিরলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়। আজই তৃণমূলে যোগ দিলেন মুকুল রায়। আজ বেলা ৩টায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বদের সাথে বৈঠক করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে ফিরলেন মুকুল রায়। আজ দুপুরে ছেলে শুভ্রাংশুকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল ভবনে পৌঁছান মুকুল রায়।


এই বৈঠকের পর বিকেল সাড়ে চারটায় সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই তৃণমূলে যোগ দিলেন মুকুল রায় ও তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়। তবে কেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন তা পরে লিখিত আকারে জানাবেন বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি এদিন, আর কত জন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি জানান আসবে অনেকেই। কতজন আসবে দেখতে পারবেনসাবাদর নেত্রী, ভারতের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কাজ করবো। 


উনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। তৃণমূল কংগ্রেস একটা পরিবার। পরে এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানালেন মমতা। মমতা আরও বলেন, আমাদের দল শক্তিশালী দল। নির্বাচনের সময় গদ্দারি করেছিল। মুকুল একটা কথাও বলেনি। নির্বাচনের সময় দলবিরোধী একটাও কথা বলেনি। নির্বাচনের সময় গদ্দারি করে বিজেপির হাত শক্তিশালী করেছে, তাদের আমরা নেব না। নরমপন্থী ও চরমপন্থী রয়েছে। যাঁরা গদ্দারি করে নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছেন তাঁদের নেব না। 


মুকুল রায় বলেন, বিজেপি করতে পারলাম না। করতে পারলাম না। সেই কারণে পুরনো ঘরে ফিরে এলাম। বাংলায় যা স্থিতি কেউ বিজেপিতে থাকবে না। তিনি প্রথমেই বলেন, ''এই ঘরে আজকের এই সভায় আমার নিজের খুব ভালো লাগছে। পুরনো মানুষদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বিজেপি থেকে বেরিয়ে এসে নতুন আঙিনায় দেখা হচ্ছে কথা বলতে পারছি। আমার ভালো লাগছে। বাংলা আবার তার নিজের জায়গায় ফিরবে। সামনে থেকে বাংলাকে নেতৃত্ব দেবেন ভারতের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।''   



আজ সকাল থেকেই বাড়তে থাকে জল্পনা। তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন মুকুল রায়। সময়ের পেরোনোর সাথে সাথে সেই জল্পনা আরও জোরালো হতে থাকে। এরপর দুপুরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে তৃণমূল ভবনে রওনা দেন মুকুল ও তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু। দুপুরে ছেলে শুভ্রাংশুকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল ভবনে পৌঁছান মুকুল রায়।



সূত্রের খবর, বিজেপির সঙ্গে ক্রমশই দূরত্ব বাড়ে মুকুল রায়ের। বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে কৃষ্ণনগর উত্তর লোকসভা আসনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। এতে রাজি ছিলেন তিনি। তাছাড়া, বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারীর গুরুত্ব বৃদ্ধিতেও অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে খবর। কয়েকদিন আগে দলের একটি বৈঠকে গরহাজির থাকেন তিনি। এরপর একটা ফেসবুক পোস্টে জল্পনা বাড়ালেও পরে জল্পনার অবসান ঘটান। এরপর, মুকুল পুত্রের পোস্ট ঘিরে জল্পনা জোরালো হয়। এরপরেই মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই আরও বাড়তে থাকে জল্পনা। অবশেষে আজ জল্পনার অবসান ঘটলো তৃণমূলে যোগ দিলেন মুকুল রায়।



তৃণমূলে থাকাকালীন চাণক্য বলেই পরিচিত ছিলেন মুকুল রায়। ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল রায়। তিনি এখন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।তৃণমূলে থাকাকালীন লোকসভা থেকে রাজ্যসভা, পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা,নির্বাচনের ঘুঁটি সাজাতেন মুকুল।কিন্তু, এবারের বিধানসভা ভোটে তাঁকে সেভাবে বিজেপির হয়ে সার্বিকভাবে কৌশল সাজাতে দেখা যায়নি।কারণ, এবার তাঁকেই কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। ফলে মূলত নিজের কেন্দ্রের আটকে ছিলেন তিনি।


তবে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি পদ থেকে সরাসরি তৃণমূলে যোগ দেবেন তা সত্যিই যে এক স্বপ্নের মতো । আজ যোগ দিলেন তৃণমূলে। আজ থেকে ফের নতুন করে যেমন ঘর গোছাতে শুরু করলো তৃণমূল অন্যদিকে ঘর ভাঙতে শুরু হল বিজেপির। সূত্রের খবর, একাধিক নেতা কর্মী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে দলকে অটুট রেখে টিকে থাকে বিজেপি তাই দেখার।