বামপন্থীদের নির্বাচনী স্লোগান "ফেরাতে হাল, ধরো লাল।"


প্রতিনিধি সঞ্জিত কুড়ি, পূর্ব বর্ধমান:- 



আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বর্ধমান শহরকে কার্যত অচল করে নিজেদের ক্ষমতা যাচাই করতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারী বর্ধমানে কেন্দ্রীয় সমাবেশ ডাকল দিলো সি পি আই এম পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি।সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্য মন্ত্রী মানিক সরকার। বামপন্থীদের এবারের নির্বাচনী স্লোগান হলো, "ফেরাতে হাল, ধরো লাল।" রবিবার বর্ধমান পার্কাস রোডে সিপিএমের জেলা পার্টি অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক।


কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এবং জনস্বার্থবিরোধী আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন করেছে সি পি আই এম । গ্রামে গ্রামে জাঠা করা হয়েছে।এই জাঠায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ এগিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেন অচিন্ত্যবাবু।গ্যাস, পেট্রোল ডিজেল, বিদ্যুত সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা, বেকারদের কাজ দেওয়া, কেন্দ্রের কৃষি আইন বাতিল, নয়া শ্রম কোড চালু করা, দলবাজি বন্ধ করে সকলের হাতে রেশন কার্ড তুলে দেওয়া, স্বাস্থ্যসাথী কার্‍ডের নামে ভাঁওতাবাজির বিরোধিতা সহ কয়েকদফা দাবীকে সামনে রেখে এই কেন্দ্রীয় সমাবেশ ডাকা হয়েছে। বামপন্থীরা গোটা জানুয়ারী মাস জুড়ে গোটা জেলায় অর্থ সংগ্রহও করেছেন।



এটা নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ অভিযান নয় বলে জানিয়েছেন অচিন্ত্য বাবু। নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের অভিযান তাঁরা পরে করবেন। এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবার স্বার্থেই। 



গত বিধানসভা ভোটের মতই এবারও বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেছে বামেরা। আগামী ২ ফেব্রুয়ারী সিপিএম যে সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তা কার্যতই নির্বাচনী সমাবেশ। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধলে এই সমাবেশে ডাক পাননি কোনো কংগ্রেস নেতা।বামেদের একক ক্ষমতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে এই সমাবেশ। কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোট হলেও এব্যাপারে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি সিপিএম পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি। 



সাংবাদিক সম্মেলনে অচিন্ত্যবাবু বলেন সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বর্ধমানে রোড শো করেছেন কয়েক কোটি টাকা খরচ করে। এমনকি তৃণমূলও পাল্টা রোড শো করেছে। কিন্তু ২রা ফেব্রুয়ারী গোটা বর্ধমান শহরকে তাঁরা অচল করে দেবেন সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে। যা ওই দুটি রোড শো-কে হার মানাবে। আর এজন্য বাইরের রাজ্য বা বাইরের জেলা থেকে তাঁদের লোক আনতে হবে না। পূর্ব বর্ধমান জেলার সমস্ত বুথ থেকেই তাঁদের কর্মী সমর্থকরা অংশ নেবেন এই সমাবেশে। 



বর্তমান জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রবীর গাঙ্গুলীর সঙ্গে এখনও তাঁদের কোনো সাক্ষাৎ হয়নি। গত নির্বাচনে জেলা কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ গাঙ্গুলী সহ কয়েকজনের সঙ্গে তাঁদের আলাপ আলোচনা হলেও এখনও কার্যতই বর্ধমান জেলায় কংগ্রেস – সিপিএম জোটের কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমল হালদার, জেলা কৃষকসভার সম্পাদক সৈয়দ হোসেন এবং জেলা কমিটির সদস্য তাপস সরকার।