'এবারে লড়াই পিঠের চামরা বাঁচানোর লড়াই'- উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ
মঙ্গলবার সিতাই বিধান সভা কেন্দ্রে কর্মীসভা আয়োজন করে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই কর্মী সভায় নামে মানুষের ঢল। কার্যত কর্মীসভা পরিণত হয়ে যায় জনসভায়। সেই মঞ্চে দাড়িয়েই বিজেপি সরকারের তুলোধনা করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তুলে ধরেন রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান। তুলনা টানেন অন্যান্য রাজ্যের সাথেও।
এদিনের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সিতাই বিধানসভার বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন, দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ, মেখলিগঞ্জের বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান, জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভনেত্রী সতীস্কৃতা দত্ত শর্মা, সিতাই ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গীতা রায়, দিনহাটা ১নং ব্লকের সভাপতি প্রসন্ন সহ সমস্ত স্তরের নেতা-নেত্রীরা।
এদিনের সভায় রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বারবার বলেন আজকের এই সভায় এসে মনে হল তৃণমূল কংগ্রেস ফুরিয়ে যায়নি। সংবাদ মাধ্যমে অনেকবার বলা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস শেষ যে যতই বলুক মমতা ব্যানার্জীর যতদিন শ্বাস থাকবে ততদিন তৃণমূল কংগ্রেসের শ্বাস থাকবে। মমতার ব্যানার্জীর উন্নয়ন, পরিষেবা, পাশে থাকা আগামী বিধানসভায় ২৫০-এর ওপর সিট নিয়ে তৃণমূলেই সরকারে থাকবে। পাশাপাশি, গত ভোটের প্রসঙ্গ টেনে সিপিএমের ওপর ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। তাঁর কথায় সিপিএম-এর "আগে রাম পরে বাম" স্লোগান দিয়ে বিজেপিকে জয় এনে দিয়েছে।
তিনি বলেন, তৃণমূল মানুষের কাজ করছে, মমতা ব্যানার্জী কাজ করছে, মমতা ব্যানার্জীর সরকার কাজ করছে তাই আদাবারি ব্রীজ হয়েছে, মেডিকেল কলেজ হয়েছে, পলিটেকনিক কলেজ হয়েছে, আইটিআই কলেজ হয়েছে, হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ঔষধের দোকান হয়েছে। সারা জেলায় প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে।
বিজেপির পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ব্যক্তিগত ভাবেও আক্রমণ করেন তিনি। পাশাপাশি নীশিথ প্রামাণিককেও তীব্রভাবে আক্রমণ করেন। বলেন, সে রাজবংশী নয় বাংলাদেশী। করোনা পরিস্থিতিতে ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পদত্যাগ করা উচিত ছিল বলেও দাবি করেন তিনি। গত লোকসভায় তৃণমূল হারলেও মানুষ এখন বুঝেছে বিজেপি আসার পর কি হয়েছে। ফলে আগামীতে জনতা তৃণমূলকেই পছন্দ করবে বলেও জানান তিনি।
এদিনের মঞ্চ থেকে বিজেপির পাশাপাশি মিমকে নিয়েও তুলোধনা করেন। তাঁর কথায় মিম পার্টি 'ভোট কাটুয়া পার্টি'। বিহার ভোটে মিম ভোট কেটেছে বলেও দাবি করেন। সবাইকে সাবধান থাকার কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, 'এবারের লড়াই পিঠের চামড়া বাঁচানোর লড়াই, স্বাধীনতা যুদ্ধের লড়াই। সবাইকে একসাথে লড়তে হবে। দিদিকে বলো, জনসংযোগ সকল প্রোগ্রামে এম এল এ রা ভূমিকা নিয়েছে। আগামী দিনে তাঁদের নেতৃত্বেই ৯টি সিটে ভোট হবে সবাইকে একসাথে কাজ করে আমাদের জিততে হবে। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতৃত্বের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন।
ভারতবর্ষের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উত্তরবঙ্গ সফরে এসে আদিবাসী-মতুয়া বাড়িতে খাওয়া নিয়েও কটাক্ষ করেন। উত্তরবঙ্গে এসে নাটক করছে বলেও উল্লেখ করেন। এই রাজ্যে মমতা ব্যানার্জী ৭৫টি পরিষেবার কথা উল্লেখ করে কন্যাশ্রী, বইপত্র সহ একাধিক পরিকল্পনা গুলির উন্নয়ন তুলে ধরেন। যা আর সারা ভারতে কোথাও নেই বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালী নেতৃত্ব দিয়েছে গুজরাতি কেউ দিয়েছে? দেয়নি। মোদি-অমিত বা তাদের পূর্বপুরুষ নেতৃত্ব দিয়েছে? দিয়েছে বাঙালীরা। বাংলা গুজরাতকে পথ দেখাবে। গুজরাত বাংলাকে দেখাবে না।
এদিন তিনি বলেন, ১০০দিনের কাজে বাংলা এক নম্বর, কন্যাশ্রী এক নম্বরে, উৎকর্ষ বাংলাকে রাষ্ট্রসংঘ পুরষ্কৃত করেছে, গ্রামীন উন্নয়নে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক এর সমীক্ষায় বাংলা এক নম্বরে। বাংলা পুরষ্কৃত হয়েছে। বাংলার উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে আলোচনা করে গুজরাত- উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে তুলনা টানেন তিনি। পাশাপাশি, অন্য রাজ্যের সঙ্গে বাংলার সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এখানে সবাই এক সাথে মিলেমিশে থাকে কিন্তু গুজরাট উত্তরপ্রদেশ বিহারে নেই। পরপর চারবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভারতবর্ষে শ্রেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পুরষ্কার পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। সাথে সাথে ভোটে দামামাও বাজিয়ে দেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊