গাড়ির দুনিয়ায় নিয়মে আসছে রদ-বদল! কর্মহীন হবার অসংখ্যা কোটি মানুষের


তনজিৎ সাহা, কলকাতা: ছোটো কিংবা বড়ো গাড়ি সারাতে গেলে, অটো মোবাইল পাশ করতেই হবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বেকার হতে চলেছেন বহু মানুষ। 

তারা নিজেরা বিষয়টি বুঝতে পারলেও,আপাতত রোজগার রয়েছে বলেই খুব একটা ভাবছেন না। সারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায়, এই পেশার ওপর নির্ভর করে জীবিকা অর্জন করেন প্রায় ১ কোটির কাছকাছি মানুষ। গাড়ি যেভাবে দিনের পর দিন উন্নত মানের প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে,বিশেষ করে ২০০০ সালের পর থেকে।তাতে অনেকটা বিপদে পড়েছে চার চাকার গাড়ি সরানোর মেকানিকেরা।

প্রতিটি গাড়িকে ই সি এম এবং পি সি এম নামে দুটি সার্কিট বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করে।এই দুটি খারাপ হলে, সেই গাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে অচল হয়ে পড়ে। গাড়ির মালিক কিংবা ড্রাইভার এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞ।সঙ্গে গ্যারাজের মিস্ত্রিরা।এটা নিঃসন্দেহে মেরামত যোগ্য।সেটা মেরামত করতে গেলে কোম্পানির সার্ভিস সেন্টারে যেতে হবে। সেখানে গেলেই চালু গ্যারাজের মিস্ত্রির ক্ষতি। তাই প্রতিটি মিস্ত্রি গাড়ির মালিককে দিয়ে নতুন আর একটি সার্কিট কিনিয়ে নেয়। ফলে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গাড়ির মালিকেরা।চালাকি করে কাজ চালিয়ে নিচ্ছে ওই মিস্ত্রিরা।

দক্ষিণ কলকাতার কামালগাজির কাছে ছোটো গাড়ির - দুই পপুলার মিস্ত্রী,শম্ভু পারাল ও দ্বীপ মাইতি। শম্ভুর কথায়, আস্তে আস্তে ব্যাটারি চালিত গাড়ি বাজারে আসছে।সেই গাড়ি গুলি বেশির ভাগ অটোমেটিক সার্কিট বোর্ডের মাধ্যমে চলে। ' আমরা অল্প শিক্ষিত।ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে অভাবের তাড়নায় পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে, আনোয়ার শাহ রোডের কাছে গ্যারেজে কাজ শেখার জন্য যোগ দিয়েছিলাম।সেখান থেকে হতে নাতে শেখা।তখন এত আধুনিক গাড়ি ছিল না। এই সব গাড়ি বের করলে,আমাদের হাতে নাতে ট্রেনিং না দিলে সারাতে পারব না। তাতে মানুষের হেনস্তা বাড়বে।

পশ্চিমবঙ্গে রাস্তার দশা চিরকালই খারাপ। তাতে মাঝ রাস্তায় গাড়ি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি চিরদিনই।তবে ইদানিং কালে নতুন প্রযুক্তির গাড়ি আসার ফলে যাত্রী হয়রানি কমেছে।আস্তে আস্তে গাড়ির দামও কমে আসছে। এখন প্রত্যেকের কাছে গাড়ি কেনা খুব সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বীপের কথায় 'এখনকার গাড়িতে আগের মত কারবোরেডার নেই, এখন একটা হাউজিংয়ের মধ্যে সব রয়েছে। যার ফলে রাস্তাতে গাড়ি আর দমকা দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় না।যার ফলে আমাদের খোঁজ আর পড়েনা।'   

সারা দেশের গ্যারাজের মিস্ত্রী ও মালিকদের কথা। অটো মোবাইল না পড়ে আগামী দিনে কেউ গ্যারেজে মিস্ত্রির কাজ করতে পারবেন না। আর যারা দীর্ঘদিন ধরে গাড়ির পেছনে নিজের জীবন দিয়ে এলো, তাদের দিন অন্ধকার হচ্ছে আস্তে আস্তে। গত কুড়ি বছরে যে ভাবে, প্রযুক্তির উন্নতি ঘটেছে, তাতে দেশের কমপক্ষে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ, পিছিয়ে পড়েছে বা প্রতারিত হচ্ছে প্রতিদিন। তবে শান্তি নামে এক মিস্ত্রির সহকারী বললেন,গাড়ির সাইলেন্সার তো থাকছেই, সেটা খুলবো, লাগাবো। ওর এটা ধারণা নেই, ব্যাটারি চালিত গাড়ির ধোঁয়া নেই, অতএব ধোঁয়া বেরোনোর কোনো যন্ত্র থাকবেই না।

তবে পেট্রোল ডিজেলের বর্তমান গাড়ি গুলো তেলের অতিরিক্ত দামের জন্য,মানুষ বর্জন করছে খুব দ্রুত। ধারণা অটো মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের। ২০২১ সালে ইলেকট্রনিকস গাড়ি বাজারে বড়ো ভাবে আসছে বলে খবর।যার একবার ব্যাটারি চার্জ দিলে,কমপক্ষে ৪০০-৫০০ কিলোমিটার যাবে।