কর্মরত অবস্থায় কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে চাকরি পাওয়া কি স্ত্রী-সন্তানের অধিকার? জানাল হাইকোর্ট 



চাকরিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় কোনো ব‍্যক্তির মৃত‍্যু হলে তার স্ত্রী-সন্তান চাকরি পাওয়ার অধিকারী নয়। একটি মামলার রায়ে এমনটাই জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন আদালত জানায়, কর্মরত অবস্থায় কেউ মারা গেলে তাঁর পরিবারকে তৎক্ষণাৎ আর্থিক কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে ডাইং হারনেস কোটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি কখনই অধিকার হতে পারে না।


২০১৩ সালে পুলিশে কর্মরত অবস্থায় ভবানী শংকর বোস নামে এক পুলিশকর্মী মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর ডাইং হারনেস কোটায় চাকরির জন্য আবেদন জানান ভবানীবাবুর বিবাহিতা মেয়ে বন্দনা ঘোষ। কিন্তু কলকাতা হেড কোয়ার্টারের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ বন্দনার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ডাইং হারনেস কোটায় চাকরির দাবিদার হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে আবেদন নাকচ করে দেয়। 


এদিকে, এরপর ২০১৭ সালে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নিশিথা মাত্রে, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর বিশেষ বেঞ্চ বিবাহিত মেয়েকেও চাকরির অধিকারের রায় দেয়। আর সেই রায়কেই হাতিয়ার করে আদালতের দ্বারস্থ হন বন্দনা। 


বন্দনা দেবীর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেন, কলকাতা হাই কোর্টের ওই নির্দেশের ফলে বিবাহিত মেয়ে ও পোষ্যের চাকরির অধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফলে বন্দনা দেবীর আবেদনটি পুনর্বিবেচনা করা হোক। কিন্তু বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, “পোষ্যের চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে পরিবারটির তাৎক্ষণিক অর্থকষ্টের বিষয়টি এসে পড়ে। তাৎক্ষণিক অর্থকষ্ট থেকে মুক্তি দিতেই কমপ্যাশনেট অ্যাপোয়েন্টমেন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি কোন অধিকার নয়।”


পাশাপাশি আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, ঐ ঐতিহাসিক রায়ে উল্লেখ রয়েছে বিবাহিতা মেয়ে যদি বিবাহ বিচ্ছিন্না, স্বামী পরিত্যক্তা বা বিধবা হয়ে পড়ে বাপের বাড়ি আশ্রয় নেন, তবেই তিনি এই চাকরি পাবার দাবি করতে পারেন। তবে, মৃত ভবানীবাবুর স্ত্রী পেনশন পাচ্ছেন ফলে তাৎক্ষনিক আর্থিক কষ্টের পড়ে না বলেই জানিয়ে মামলা খারিজ করে দেয় আদালত।