UUPTWA,হুগলি জেলার উদ্যোগে আরামবাগে তৈরী হল পাখিদের বাগান



গৌতম সাহা,আরামবাগঃ

মানব সভ্যতার অগ্রগতির জয়রথ তড়তড় করে এগিয়ে চলেছে। ফলে দিনকে দিন বৃক্ষছেদনের ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বিশ্বায়নকে প্রায়ই অরণ্য উচ্ছেদের অন্যতম মূল কারণ বলে মনে করা হয়। বৃক্ষছেদনের কারনগুলির মধ্যো কাঠ চোরাচালান, শিল্পায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জনস্ফীতি এবং নগরায়ন ইত্যাদি কে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এছাড়া বড় বড় ঝড় যেমন অাইলা,অামফান ইত্যাদির মতো ঝড়ে লক্ষ লক্ষ গাছ প্রতি বছর ভেঙে পড়ে। আরও পড়ুনঃ কোচবিহারে ভাইরাল গোলাপী আকাশ 

এই বৃক্ষছেদনের জন্য সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হচ্ছে গোটা পক্ষিকূলের। হারিয়ে যাচ্ছে তাদের বাঁসা, কম পড়ছে তাদের খাবার তথা গাছের ফলমূল। এছাড়াও সভ্যতার করাল গ্রাসে পুকুর,খাল,বিল ভরাট হয়ে গড়ে উঠছে কংক্রিটের জঙগল। ফলে পাখিরা পাচ্ছেনা বিশুদ্ধ জল বরং তাদের পান করতে হচ্ছে নর্দমার বিষাক্ত জল বা জমিতে সার বা ওষুধ মেশানো জল।এর ফলে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে পাখিদের। 

এমতাবস্থায় আধুনিক সভ্যতার জয়যাত্রার ধ্বজাধারী হয়ে অামরা পক্ষী সমাজের বিরাট ক্ষতি করে চলেছি। পাখিদের থাকার জায়গা,খাদ্য ও পানযোগ্য জলের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে আসছে। একসময় আরামবাগে বহু প্রজাতির পাখি দেখা যেত। তবে বর্তমানে সে সংখ্যা অনেক কমেছে, কমেছে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা। এই সব অবস্থার কথা মাথায় রেখে "উস্থী ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন" এর পক্ষ থেকে আরামবাগ মহকুমার শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ, আরামবাগ স্টেশন সংলগ্ন অব্যবহৃত মাঠে একটি ফলের বাগান তৈরি করছেন। এই মহৎ কাজে সহযোগিতা করছেন আরামবাগের BDO সাহেব এবং ভারতীয় রেল। 

বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য এই বাগানের ফলের অধিকার শুধু পাখিদেরই থাকবে। অগামীদিনে কোন ভাবেই এই বাগানে তৈরী হওয়া ফলমূলে হাত দেওয়া হবে না। এখানে থাকবে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যাবস্থাও, এমনকি গাছে গাছে প্রাকৃতিক উপায়ে পাখীদের বাঁসাও তৈরী করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন এই মহকুমার প্রকৃতিপ্রেমী কিছু প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অাজ সকালে প্রায় ৭০ টি ফলদায়ী গাছ রোপণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সুসম্পন্ন হয়, উপস্থিত ছিলেন অারামবাগ রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার।

এই রকম একটি অভিনব অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে  গর্বিত অরামবাগ মহকুমার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা। হুগলি জেলাৱ প্ৰাথমিক শিক্ষকৱা চান এই ভাবে নানা জায়গাতে নিৱাপদ পাখিদের বাগান গড়ে উঠুক। এই অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন জেলার জেলা পরিদর্শক ও বিভিন্ন চক্রের পরিদর্শকরা।

উস্থি প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি তন্ময় ঘড়ুই জানালেন নিয়মিতভাবে যত্ন ও রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব তুলে নেবেন তারা এবং সুদীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ধীরে ধীরে গড়ে তুলবেন এই স্বপ্নের বাগান তথা 'পাখিদের বাগান'।