চলে গেলেন উচ্চতর গণিতের প্রবাদপ্রতিম লেখক অধ্যাপক এস. এন. দে
শিক্ষার্থীদের যদি প্রশ্ন করা হয় কোন বিষয়টি পড়তে ভালো লাগে না বা ভয় লাগে? অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী একবাক্যে উত্তর দেবে 'গণিত'। তবে উচ্চতর গণিতের ক্ষেত্রে এই ভীতি অনেকটাই দূর করতে সক্ষম হয়েছিলেন অধ্যাপক সৌরেন্দ্রনাথ দে ওরফে এস. এন দে। গণিত যদি আতঙ্কের নাম হয়, তবে সমাধান অবশ্যই এস এন দে’র অঙ্কের বই’। মাধ্যমিক পাশ করার পর পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞান পড়ুয়াদের কাছে প্রধান ভরসার নাম এস. এন. দে এর অঙ্কের বই।
BREAKING NEWS অবশেষে এলো সাফল্য- আবিষ্কার হলো করোনা ভ্যাকসিন
বীজগণিত, পাটিগণিত, ত্রিকোনোমিতি, লগারিদম এর সাথে যুক্ত হয়েছে ক্যালকুলাস, স্থানাঙ্ক জ্যামিতি এবং সেট থিওরি। এইসব জটিল বিষয় থেকে বিগত কয়েক দশক মুক্তি দিয়ে আসছে যেই নাম, সেই এস. এন. দে গত ৬ আগস্ট ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৬ বছর বয়সে নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
১৯৪৪ সালে শ্রীরামপুরের কালিতলা অঞ্চলে জন্মগ্রহণ সৌরেন্দ্রনাথ দে। পারিবারিক অবস্থা তেমন স্বচ্ছল ছিল না। কিন্তু ছোটোবেলা থেকেই পড়াশুনোর প্রতি, বিশেষ করে অঙ্কের প্রতি তার আগ্রহ সবাইকেই অবাক করেছিল। আর তাই নিজের মেধার জোরেই পড়াশুনো চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শ্রীরামপুর ইউনিয়ন স্কুলে প্রাথমিক পড়াশুনো এবং শ্রীরামপুর কলেজ থেকে প্রি-ইউনিভার্সিটি স্তরের পড়াশুনো শেষ করে ভর্তি হন বিদ্যাসাগর কলেজে। সেখান থেকেই স্নাতক এবং তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত গণিতে স্নাতোকত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। অতঃপর পিএইচডি করে যোগ দেন শিক্ষকতায়। দক্ষিণ কলকাতার হেরম্বচন্দ্র কলেজে (সিটি কলেজ) গণিত ও পরিসংখ্যান বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। পাশাপাশি শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজ এবং ব্যারাকপুরের মহাদেবানন্দ কলেজে আংশিক সময়ের অধ্যাপনা করেছেন সৌরেন্দ্রনাথ দে।
জীবনে কোনোরকম আড়ম্বর পছন্দ করতেন না এস. এন. দে। বইয়ের পাতার অসংখ্য জটিল অঙ্ক আর উদাহরণের মধ্যে আড়ালেই থেকে গিয়েছেন মানুষটি। শেষ জীবনটা তাঁর একাকীত্বতায় কেটেছে। লড়ছিলেন ক্যান্সারের মতো দূরারোগ্য ব্যধির সঙ্গে। হৃদরোগেও ভুগছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। সেই রোগের তাড়নাতেই ৭৬ বছর বয়সে পৃথিবী পরিত্যাগ করলেন এই স্বনামধন্য গণিত স্যার।
তিনি চলে গেলেও তাঁর রেখে যাওয়া বইগুলো বছরের পর বছর ধরে আগামীতেও দিশা দেখাবে পড়ুয়াদের। অঙ্কই ছিলো যার সর্বোক্ষণের সঙ্গী এরূপ একজন অধ্যাপক কে হারিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শোকের ছায়া শিক্ষামহলে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊