দেশব্যাপী AIKSCC-র ৯ দফা দাবী সমর্থনে কর্পোরেট তাড়াও কৃষি বাঁচাওআন্দোলন

প্রেস রিলিজ,  ৯ অগাস্ট, ২০২০: সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটি, ঝাড়গ্রাম ইউনিট

শচীন পাল, সংবাদ একলব্য: আজ সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির দেশব্যাপী ৯ দফা দাবী সমর্থনে কর্পোরেট তাড়াও কৃষি বাঁচাও আন্দোলন শুরু হল। ঝাড়গ্রাম জেলার লোধাশুলিতে AIKSCC শ্রমিক সংগঠন এবং নেতৃত্বের উপস্থিতিতে প্রতিবাদ দিবস পালিত হলো। এছাড়াও গোপিবল্লভপুর-১ ও জাম্বনী ব্লকেও AIKSCC সদস্য সংগঠন জয় কিষাণ আন্দোলন প্রতিবাদ সভা করে।

ঐক্যবদ্ধ ভাবে লাগাতার প্রতিবাদের ডাক দিলেন সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটি এবং কৃষি বিরোধী যে চারটি অধ্যাদেশ কেন্দ্রীয় সরকার এনেছে, করোনা সময়কালে  সেই অধ্যাদেশ কপি পুড়িয়ে সরকারকে হুশিয়ারি জারি করা হল। যতক্ষন পযর্ন্ত এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না করা হবে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। এই কর্মসূচীকে আগামীদিনে অঞ্চলে অঞ্চলে এবং গ্রামে নিয়ে যাওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে এই প্রতিবাদ সভা থেকে।

এই সভায় উপস্থিত নেতৃত্বরা হলেন, সারা ভারত কৃষক সভা- মনোরঞ্জন ঘোষ, সারা ভারত অগ্রগামী কিষাণ সভা- অশোক ব্যানার্জি, জয় কিষাণ আন্দোলন থেকে- অশোক মাহাত, সংগ্রামী কৃষক সমিতি থেকে- নিরঞ্জন বেরা।

৯ দফা দাবী গুলি হলো:

১। ঋণমুক্তি: প্রাথমিকভাবে, এই বছর করোনার জন্য সব কৃষকের রবি ফসলের ঋণ মুকুব করতে হবে এবং খরিফ ফসলের জন্য KCC দিতে হবে। সমবায়গুলোর ঋণের সুদ মুকুব করে  আসল আদায় বন্ধ করতে হবে। এরপরে সরকারের উচিত AIKSCC-র তৈরি করা কৃষকের ঋণ মুক্তির আইনটি পাস করতে করা।
২। পুরো দাম: সব ফসল, সবজি, ফলমূল এবং দুধের MSP কমপক্ষে C-2 খরচের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি ঘোষণা করতে হবে। এই দামে ফসল কেনার নিশ্চয়তা সরকারকে দিতে হবে। MSP-র   চেয়ে কম দামে ক্রয়কে ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে ঘোষণা করতে হবে।
৩। কৃষকবিরোধী অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে: ০৫.০৬.২০২০- এ জারি করা তিনটি অধ্যাদেশ-
  • ক) কৃষি উৎপাদন, বাণিজ্য ও ব্যাপার (সংবর্ধন ও সুবিধা) অধ্যাদেশ ২০২০
  • খ)  কৃষি সেবা অধ্যাদেশ ২০২০
  • গ)  অত্যাবশ্যক পণ্য অধিনিয়ম (সংশোধনী) ২০২০ সরকারকে ফিরিয়ে নিতে হবে।


এগুলো কৃষকবিরোধী। এগুলোর জন্য ফসলের দাম কমে যাবে, চাষের খরচ বেড়ে যাবে এবং বীজ সুরক্ষা শেষ হয়ে যাবে। খাদ্য সুরক্ষা এবং সরকারী হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। এইগুলো পুরোদমে কর্পোরেটকে উৎসাহ দেবে, এবং এগুলো খাদ্য সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ,  মজুতদারী ও কালোবাজারী বাড়িয়ে দেবে। কৃষকদের "এক জাতি এক বাজার" নয় "এক জাতি এক এম.এস.পি" দরকার।
৪। ডিজেলের দাম অর্ধেক করতে হবে, কেননা ২০১৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিক দাম ৬০% কমেছে কিন্তু ভারত সরকারের কর দ্বিগুণ বেড়েছে।
৫। ২০২০ সালের বিদ্যুৎ বিল ফিরিয়ে নিতে হবে করোনার প্রভাবের জন্য কৃষক, ছোট দোকানদার, ছোট এবং মাইক্রো উদ্যোগী এবং সাধারণের বিদ্যুৎ বিল মুকুব করতে হবে। DBT স্কিম বাতিল করতে হবে।
৬। এই বছর কৃষকদের ফসলের লোকসানের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে শিলাবৃষ্টি, অসময়ের বৃষ্টিপাত এবং লকডাউনের কারণে সবজি, ফলমূল, ফসল এবং দুধের ক্ষয়ক্ষতির জন্য সরকারকে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৭। এই বছর মনরেগার আওতাধীন কাজের গ্যারান্টি বাড়াতে হবে ২০০ দিন কাজ দিতে হবে এবং ন্যূনতম মজুরির হারে মজুরি দিতে হবে যাতে ক্ষেত মজুর, ছোট কৃষক, কাজ ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসা মজুর এবং প্রবাসী কৃষক এই সংকটের সময় কাজ পেতে পারে।
৮। করোনা সময়কালে সরকারকে প্রত্যেক ব্যক্তিকে পূর্ণ রেশন দিতে হবে  যাতে কৃষকের কঠোর পরিশ্রমের ফলে তৈরি দেশের খাদ্যভাণ্ডার ব্যবহৃত হয়। রেশনে প্রতি মাসে ইউনিটপিছু ১৫ কেজি চাল/আটা, ১ কেজি তেল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি দিতে হবে।
৯। দেশের কৃষক ও আদিবাসীদের চাষের জমি কোম্পানীদের দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে এবং বনজমিতে ক্যাম্পা আইনের নামে জোরকরে বৃক্ষ রোপণ বন্ধ করতে হবে।