জেলা জুড়ে স্বতঃস্ফূর্ত লকডাউন-সারাদিন চললো কড়া পুলিশি টহল 

রাজেন্দ্র নাথ দত্ত, মুর্শিদাবাদ :

রাজ্যজুড়ে সপ্তাহে দু’দিন লকডাউন ঘোষণা হতেই পুলিশ প্রচারে নেমেছিল। অপ্রয়োজনে বেরোলেই কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। কথামতোই লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও কড়া ব্যবস্থা নিতে দেখা গেল মুর্শিদাবাদ জেলার সমস্ত থানার পুলিশকে। লকডাউনের সকালে কোথাও লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করতে দেখা গিয়েছে, তো কোথাও বা অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বেরোনোর অভিযোগ পুলিশ আটক করেছে । তবে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বাসিন্দারা লকডাউন সফল করেছেন। দু’এক জায়গায় যে বিধিভঙ্গের ছবি মিলেছে, তা নেহাৎই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই জানিয়েছে প্রশাসন।


এ ছাড়া জেলা জুড়ে প্রায় সব জায়গায় পুলিশকে টহল দিতেও দেখা গিয়েছে। বাইরে কেউ বেরোলে গাড়ির কাগজপত্র থেকে শুরু করে পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছে পুলিশ। বাইরে বেরনোর পর্যাপ্ত কারণ না দেখাতে পারলেই পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে।


বহরমপুরে শহরের কয়েকটি জায়গায় চায়ের দোকান, আড্ডার ঠেক ছাড়া সাধারণ মানুষকে তেমন রাস্তায় দেখা যায়নি।মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের ব্যস্ততম ওষুধের দোকান থেকে খোলা থাকলেও সেখানেও ভিড় ছিল না। হাসপাতাল চত্বরেও লোকজন অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল। দোকান বাজার থেকে শুরু আনাজ, মাছ, মাংসের দোকানও এদিন বন্ধ ছিল। দোকানপাট সব বন্ধ ছিলো নওদা, হরিহরপাড়াতেও। 

লকডাউনের দ্বিতীয় দিন হরতালের চেহারা নিয়েছিল জঙ্গিপুর মহকুমা জুড়ে। পুলিশ কড়া মেজাজে থাকলেও কারও গায়ে হাত তোলেনি, এমনকি লাঠি থাকলেও ঘা পড়েনি কারও পিঠে। জঙ্গিপুরে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে।  সংক্রমণ এড়াতেই পুলিশ কারও গায়ে হাত তোলেনি। তবে পুলিশি টহল আছে সর্বত্র।



অতীতে এমন সফল লকডাউনের চেহারা দেখা যায়নি কোথাও। এমনকি শামসেরগঞ্জ ব্লক ও ধুলিয়ান শহরেও পুলিশ দাপিয়ে বেরিয়েছে এদিন। ঝাড়খন্ড লাগোয়া ভাসাইপাইকর, বাসুদেবপুরে এ পর্যন্ত কখনও এমন লকডাউন দেখা যায়নি। এ দিন সেখানেও দোকান পাট ছিল পুরোপুরি বন্ধ। রাস্তায় লোকজন বা যানবহন দেখা যায়নি বললেই চলে। রঘুনাথঞ্জ ও জঙ্গিপুর শহরে আনাজের সমস্ত বাজার ছিল বন্ধ। দু’একটি দোকান খোলার চেষ্টা করলেও পুলিশ ছিল অত্যন্ত কড়া মেজাজে। রঘুনাথগঞ্জে ড্রোন ওড়ানো হয়। বিড়ি শিল্পতালুক অরঙ্গাবাদ ছিল শুনসান।


ডোমকলেও কড়া ছিল পুলিশ। এদিন সকালে অপ্রয়োজনে কিছু লোক বেরোতেই পুলিশ লাঠি উচিয়ে তাড়া করে। মুহূর্তের মধ্যে ডোমকলে সে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সকাল থেকেই রাস্তাঘাট সুনসান হয়ে যায়। দোকান বাজার বন্ধ ছিল। এ ছাড়া অপ্রয়োজনে ঘর ছেড়ে বেরনোর জন্য কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে।লালবাগ মহকুমাতেও শনিবার সকাল থেকে পুলিশি টহল ছিল। লালগোলা, ভগবানগোলা, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের কয়েকটি জায়গায় আড্ডা ছিল। শনিবার ভোর থেকে কান্দীর বাজার, হাট, ব্যস্ততম মোড়ের মাথা দখল নিয়েছিল পুলিশ। এদিন কান্দী , বড়ঞা, খড়গ্রাম, ভরতপুর ১ ও ২ ব্লকের রাস্তাঘাট সুনসান ছিল। দোকান বাজার সাপ্তাহিক হাট, আনাজের বাজার, মাছের বাজারও বন্ধ ছিল।