The state's education system is changing, TELE-EDUCATION is going to start in August


SANGBAD EKALAVYA: 

সব কিছুই কেমন যেন উলট-পালট হয়ে গেল কয়েক মাসেই। করোনা মহামারী কীভাবে সব কিছু পরিবর্তন করে দিলো নিমেষেই। শুধু যে প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই মহামারী তাই না, ধ্বংস করে দিয়েছে প্রচলিত জীবন যাপন থেকে অর্থনীতি। পাল্টে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থাও। 

বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে। এই বন্ধের পর সারাদেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাকেন্দ্রে ফিরে গিয়ে এক নতুন পরিবেশের মুখোমুখি হবে। এই নতুনত্ব আসবে শ্রেণিকক্ষে, পরিবর্তন আসবে পাঠপ্রদানের ধরনে, বাড়বে রিমোট লার্নিং। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে শিশুরাও আগের মতো একসঙ্গে দলবেঁধে শ্রেণিকক্ষে যেতে পারবে না। সব মিলিয়ে উদ্ভূত এই নতুন পরিস্থিতিকে বৈশ্বিকভাবে ‘নিউ নরমাল’ নিয়ম হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর এর পূর্ণাঙ্গ চিত্রপট কেমন হবে— তা নিয়ে বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে সরকার।

আর এরই মাঝে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের প্রস্তুতি তুঙ্গে। রাজ্যের  স্কুলশিক্ষা দপ্তর টেলিফোন এবং স্যোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট হােয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠদানের পরিকল্পনা নিয়েছিল কিছুদিন আগেই। আর এই পরিকল্পনাকে বাস্তবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবার জেলাভিত্তিক রিসাের্স পার্সন তৈরি করে তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু করছে  শিক্ষা দপ্তর। শুরু হতে যাচ্ছে রাজ্যের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা- "বাংলার শিক্ষা দূরভাষে" (BANGLARSHIKSHA DUROBHASE) । 


সম্প্রতি শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন ভিডিও কনফারেন্স করেন সমস্ত জেলার ডিআইদের সঙ্গে। তাতে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা কমিশনার, পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন-এর রাজ্য প্রকল্প অধিকর্তা এবং সিলেবাস এক্সপার্ট কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।  ডিআইদের জেলাভিত্তিক ভাগ করে দু’দফায় বৈঠক হয়েছে। তাতে মূলত প্রযুক্তির মাধ্যমে পাঠদানে শিক্ষকদের সড়গড় করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, জেলাভিত্তিক রিসাের্স পার্সন তৈরি করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তারপর তাঁদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পাবেন অন্যান্য শিক্ষকরা। তাঁরা তারপর টেলিফোন বা হােয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করবেন। এর জন্য শিক্ষাদপ্তর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একটি বেসরকারি টেলিপরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও করেছে বলে সূত্রের খবর। 

অর্থাৎ রাজ্য শিক্ষা দপ্তর একটি  টেলি-টিচিং (tele-teaching) শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যা শুধু বর্তমান লকডাউন সময়ের প্রেক্ষাপটেই নয়, হয়তো নিউ নরমাল সময়েও ব্যবহার করা হতে পারে। কিন্তু কী ভাবে এই ব্যবস্থা কাজ করবে? এক্ষেত্রে শিক্ষা দপ্তর একটি Tollfree নাম্বারের ব্যবস্থা করবে, যা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে চতুর্থ দফায় Mid-day meal দেওয়ার সময় প্রত্যেক বিদ্যালয় থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের ফোন নাম্বার সংগ্রহের কাজ করা হয়েছিল। যাতে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রির কাছে শিক্ষাদপ্তর সেই tollfree নাম্বার পৌঁছে দিতে পারে। এই নাম্বারে ছাত্র-ছাত্রীরা ফোন করলেই রাজ্য জুড়ে প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের কাছে ফোন চলে যাবে । এরপর ছাত্র-ছাত্রী নিজেদের শিক্ষা-সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানাবে আর শিক্ষক তার সমাধান বাতলে দেবেন। 

ইতিমধ্যে জেলাভিত্তিক নির্বাচিত রিসর্স পার্সন এবং টেলি-টিচারের লিস্ট তৈরি হয়ে গেছে। অগাস্টের প্রথম সপ্তাহেই প্রথম পর্বের ট্রেনিং প্রতি জেলায় শুরু হবে বলে জানা গেছে। এই বিষয়ে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর Barrackpore এর artificial intelligence institute কে একটি চিঠিতে জানিয়েছেন- 

১. স্কুল শিক্ষা বিভাগ একটি টোল ফ্রি নম্বর চালু করবে যার মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষকগণ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দেবে।
২. তালিকাভুক্ত রিসোর্স শিক্ষকদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ অধিবেশন গুগল মিটের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হবে জেলা অনুসারে প্রক্রিয়াটি সহজ করার জন্য ।
৩. সংযুক্ত তালিকা অনুসারে তালিকাভুক্ত শিক্ষক (সময়ে সময়ে প্রেরিত) এই উদ্দেশ্যে নিযুক্ত থাকবেন
বিভাগ দ্বারা নির্ধারিত প্রোটোকল এবং সময়সীমা অনুসারে।
৪. হোয়াট অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ধারাবাহিক যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে বিষয়ভিত্তিক নোডাল অফিসারদের পাশাপাশি KRP / DRP দের পরবর্তী সভার সময়সূচী এবং অন্যান্য সম্পর্কিত নির্দেশের জন্য ।
৫. আপাতত এটি কেবলমাত্র নবম ও দশম শ্রেণীর জন্য শুরু করা হবে এবং পরবর্তীতে এটি সব শ্রেণির জন্য শুরু করা হতে পারে। 
৬. ক্লাস নেওয়ার সময় একটি  রুটিন সরবরাহ করা হবে যার মাধ্যমে শিক্ষকগণ তাঁদের টেলি ক্লাসের তারিখ এবং সময় সম্পর্কে  আগে থেকেই জানতে পারবেন। 

এখন দেখার কতটা সুদূরপ্রসারী হতে পারে রাজ্যের এই টেলি  এডুকেশন (tele-education) সিস্টেম- "বাংলার শিক্ষা দূরভাষে" (BANGLARSHIKSHA DUROBHASE) । প্রসঙ্গত আসাম সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনা সংক্রমণের আগেই কেন্দ্রের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর টেলি-শিক্ষা (tele-education) প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল, যা কিছুকাল অবধি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট বেঙ্গালুরু (আইআইএমবি) -র নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম দ্বারা পরিচালিত ছিল।