৬ জুলাই ইউজিসি নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ গুলিকে টার্মিনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে হবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ইউজিসি'র এই নির্দেশিকায় আপত্তি জানিয়ে বৃহস্পতিবারই রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর চিঠি পাঠিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে। পাশাপশি, রাজ্যের উপাচার্য পরিষদের পক্ষ থেকেও ইউজিসি এর নির্দেশিকা 'না' মানার কথা জানিয়েছে। এবার, সেই আপত্তি সোজাসুজি প্রধানমন্ত্রীর কাছে। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউজিসি'র নির্দেশিকায় আপত্তি জানিয়ে শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন। ইউজিসি'র নির্দেশিকার আপত্তি জানানোর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তরফে যে অ্যাডভাইজারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দেওয়া হয়েছে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা নিয়ে, তাও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বিশদে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।


প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, "২৯ এপ্রিল ইউজিসি'র তরফে যে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে সেটিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, সেটি একটি অ্যাডভাইজারি। আবার ইউজিসি-র তরফে ৬ জুলাই বলে দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই টার্মিনাল সেমিস্টার নিতে হবে। বর্তমানে করোনাসংক্রমণ যে হারে বাড়ছে সেই পরিস্থিতির নিরিখে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে ২৭ জুন একটি অ্যাডভাইজারি দেওয়া হয় প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে। অ্যাডভাইজারিতে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইন্টার্নাল অ্যাসেসমেন্ট নম্বর এবং আগে হয়ে যাওয়া সেমিস্টারের নম্বরের নিরিখে পডুয়াদের মূল্যায়ণ করা। শুধু তাই নয়, অ্যাডভাইজারিতে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা মূল্যায়নে সন্তুষ্ট হবে না, তাঁদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে।"


মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে আরও জানিয়েছেন, "রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলি রাজ্য সরকারের অ্যাডভাইজারি মেনে ইতিমধ্যেই মূল্যায়নের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। ছাত্র-ছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকরা এই এডভাইজারির প্রশংসাও করেছেন। সম্প্রতি ইউজিসি'র জারি করা গাইডলাইনে নিরিখে আমার কাছে প্রচুর ই-মেল আসছে ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষক সমাজ থেকে। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় ইউজিসির এই ধরনের গাইডলাইন শুধুমাত্র এ রাজ্যের পড়ুয়াদের নয়, সারাদেশের ছাত্রছাত্রীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। আমি ইতিমধ্যেই শুনেছি অন্যান্য রাজ্য তাদের উদ্বেগের কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছে ইউজিসির এই গাইডলাইন নিয়ে। আমার তাই অনুরোধ আপনার কাছে যাতে এই গাইডলাইন তাড়াতাড়ি পুনর্বিবেচনা করা হয় এবং দ্রুত ইউজিসির তরফে অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়। সেক্ষেত্রে রাজ্যের পক্ষে সুবিধা হবে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে। ছাত্র এবং শিক্ষক সমাজকে আমাদের দেশের এবং সারা বিশ্বের সম্পদ। তাদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুরক্ষা করা দায়িত্ব আমাদের। তাদের কোনভাবে হতাশ করাটা ঠিক নয়।"