বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও সচেতনতার অভিনব পাঠদান
নিজস্ব প্রতিনিধি, মুর্শিদাবাদঃ
বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও সচেতনতার অভিনব পাঠদান মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রথম উদ্যোগ নিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা চক্রের ৩০ আণ্ডিরণ প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
করোনা অতিমারী ভাইরাসের প্রকোপে প্রায় চার মাস স্কুল বন্ধ । ফলে পঠন পাঠন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল শিক্ষার্থীরা। সরকারী উদ্যোগে টেলিভিশন পর্দায় শুরু হয়েছিল বাংলার শিক্ষা অনলাইনে ক্লাস ।পরবর্তীতে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের নিজস্ব উদ্যোগে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনলাইন পঠন পাঠন। কিন্তু ৩০, আণ্ডিরণ প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কে অনলাইন পঠন পাঠন শুরু করেও থেমে যেতে হয়েছে । প্রত্যন্ত গ্রামের অধিকাংশ মানুষ দিন আনে দিন খাই, আধুনিক মোবাইল কেনার ক্ষমতা তাদের নেই বললেই চলে। অনলাইনে পড়াশোনা করতে গিয়ে দেখা যাই মোট ১৬২ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১৫ জন অভিভাবকদের আধুনিক ফোন রয়েছে। ফলে শিক্ষায় একটা বৈষম্য তৈরী হচ্ছিল যার জন্য বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয় অনলাইন পঠনপাঠন।
মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইচ্ছা কে সম্মান দিতে শিক্ষকরা শুরু করেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঠদান। এই উপলক্ষ্যে আণ্ডিরণ গ্রামের স্কুল সংসদের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় ভ্রাম্যমান পাঠদান কর্মসূচী -পাশে আছেন মাস্টারমশাই ।তারা বেছে নেয় আণ্ডিরণ পূর্বপাড়া মন্দির প্রাঙ্গন, দাসপাড়ার সমবায় সমিতির ফাঁকা যাওয়া, ষষ্টি তলার মন্দির প্রাঙ্গন।
এলাকা ভিত্তিক বিদ্যালয়ে পাঠরত ২০ -২৫ শিশুদের নিয়ে চলছে এই পাঠদান কর্মসূচী। কিন্তু পাঠদান করতে গিয়ে দেখা যায় কয়েকটা এলাকায় বেশ কিছু শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হচ্ছিল তাই শিক্ষকদের মহৎ উদ্যোগে এগিয়ে এলেন অভিভাবকরা ,তারা নিজের বাড়িতেই যায়গা করে দিলেন, কেও তক্তপোষ তো কেও সাফাই বসে সামাজিক দূরত্ব রেখে পড়াশোনা করলো।
এই অভিনব শিক্ষা এগিয়ে এলেন বেলডাঙা চক্রের মাঠপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক মৃন্ময় প্রামাণিক এগিয়ে এলেন সুদর্শন চক্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমন্ত চক্রবর্তী। পাঠদানে অংশীদার হলেন। বাংলা, ইংরাজি,গণিত ,পরিবেশ সাথে সচেতনতার পাঠ দিয়ে ভীষণ খুশি তারা। বারবার স্যানিটাইজার করার ব্যবস্থা দেখে খুশি অভিভাবকরাও।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলছে নিরবিচ্ছিন পাশে থাকার বার্তা। গ্রাম বাংলার অধিকাংশ শিশুরা বাড়িতে সে ভাবে পড়া শোনা করে না তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্কুল ছুটির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। আর এটা যাতে না হয় তাই এই মহৎ উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সমাজের সকল শ্রেনীর মানুষ।
প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ দত্তের কথায় গ্রাম বাংলায় অসহায় মানুষের পাশে সব রকম সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে এই কঠিন সময়ে শিক্ষক শিক্ষিকারা। আর এই মহৎ উদ্দেশ্যে সাড়া পড়বেই গোটা জেলায় এটা আশা করি কারণ আমরা শিক্ষক শিশুদের ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশী আমাদের আছে। সামাজিক নিরাপত্তা ও করোনা মোকাবেলায় যা যা সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন সব নিয়ে এগিয়ে এলে অসুবিধা হওয়ার কথা নাই।
আর এই উদ্যোগ কে মাথায় করে নিয়েছে আণ্ডিরণ গ্রামের সাধারণ মানুষ। প্রধান শিক্ষক ও অন্য সহকারী শিক্ষক দের প্রচেষ্টায় সামিল হয়ে সন্তানদের স্যানিটাইজার সহ পাঠিয়ে দিচ্ছেন ভ্রাম্যমান পাঠদান ক্ষেত্রে। তাদের শিশুদের পাশে আছেন মাস্টারমশাইরা এটাই তাদের কাছে গর্বের।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊