source:twitter

মাত্র ৩৪ বছর বয়সের বলিউড জগতের অন্যতম নক্ষত্রের অকাল পতনে শোকস্তব্ধ সিনে দুনিয়া থেকে ক্রীড়া জগত সর্বত্র। শোক প্রকাশ করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করে টুইটে লেখেন, সুশান্ত সিং রাজপুত ... একজন উজ্জ্বল তরুণ অভিনেতা খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন।টিভিতে এবং ছবিতে তিনি দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। বিনোদন জগতে তাঁর উত্থান অনেককে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং তিনি বেশ কয়েকটি স্মরণীয় পারফরম্যান্সের পিছনে ফেলেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে হতবাক। আমার চিন্তাভাবনা তার পরিবার এবং ভক্তদের সাথে রয়েছে। ওম শান্তি।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, অত্যন্ত প্রতিভাবান সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর দুর্ভাগ্যজনক সংবাদ শুনে সত্যই হতবাক ও দুঃখ পেয়েছি। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং যারা তাঁর কাজের প্রশংসা করেছেন তাদের প্রতি আমার সমবেদনা।
ক্রিকেটের ভগবান মাস্টার ব্লাস্টার শচিন তেন্দুলকর অভিনেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর কথা শুনে হতবাক ও দুঃখিত। এমন একজন তরুণ ও প্রতিভাবান অভিনেতা। তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল. তাঁর আত্মা আরআইপি করুন।

সুশান্তের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে হতবাক গোটা দেশ। লকডাউনের ফলে পথে নেমে নয়, ফেসবুক- টুইটার জুড়ে চলছে শোকপ্রকাশ। বাকিদের মতোই সুশান্তের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছিলেন করণ জোহর, আলিয়া ভাট।  কিন্তু তাঁদের শোকপ্রকাশ মেনে নিতে পারেনি সুশান্তের গুণমুগ্ধ ফ্যান। করন-আলিয়ার  বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন টুইটারিয়ানরা। #boycottbollywood- #nepotisminbollywood #bycottkarnjohrgangmovie  #BoycottFakeStars -এর ঝড় উঠেছে টুইটারে।  “দয়া করে কুমিরের কান্না কাঁদবেন না।” বলে করন-আলিয়াকে  সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা। 


কিন্তু কেন? কেন করণ আর আলিয়ার উপর এত ক্ষোভ ? জানাগেছে- করণ জোহরের জনপ্রিয় টক শো ‘কফি উইথ করণ’-এর একটি এপিসোডে হাজির ছিলেন আলিয়া ভাট, বরুণ ধাওয়ান এবং সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। সেখানে আলিয়াকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রণবীর সিং, রণবীর কাপুর আর সুশান্ত সিং রাজপুতের মধ্যে কাকে কত রেটিং দেবেন নায়িকা। সুশান্তের নাম শুনে আলিয়া বলেছিলেন, “সুশান্ত সিং রাজপুত! এ আবার কে?” এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। এই তিন নায়কের নাম দিয়েই সঞ্চালক করণ, আলিয়াকে জিজ্ঞেস করেন তিনি কার সঙ্গে ডেটে যেতে চান এবং কাকে বিয়ে করতে চান আর কাকে মেরে ফেলতে চান। আলিয়ার মেরে ফেলার তালিকায় নাম ছিল সুশান্তের। ছোট একটা সরি বলার পর একচোট হেসেছিলেন আলিয়া এবং করণ।


যে ছেলেটা ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যান্সার হিসেবে নায়কদের পেছনে নাচতো একসময়, টেলিভিশন সিরিয়ালে সেকেন্ড লিড ছিল সে নিজের সততা ও ট্যালেন্ট দিয়ে সফলতার শিখরে পৌঁছাতে চেয়েছিল। যে সফলতার স্বাদ সে পেয়েছিলও বেশ কয়েকবার কিন্তু কফি উইথ করন আর অনন্যাদের স্ট্রাগলের যুগে সুশান্তের মতো অভিনেতারা কতোটুকুই বা এগিয়ে যেতে পারেন!


নিয়মিত প্রমাণ করে যেতে হয় সুশান্তের মতো অভিনেতাদের, সফল হলেও কৃতিত্ব দিয়ে দিতে হয় অন্য কাউকে। ডিপ্রেশন আসলে অনেকগুলো দুঃখ ও বিষণ্ণতার সমষ্টি। হতেও পারে এগুলোর প্রভাব ছিল সুশান্তের ডিপ্রেশনে, হতেও পারে তার ব্যক্তিগত জীবনে সে অসুখী ছিল কিছু নিয়ে, হতে পারে কিছুদিন আগে তার ম্যানেজার মেয়েটির আত্মহত্যা তার মনে প্রভাব ফেলেছিল, হতে পারে তার শেষ ইনস্টাগ্রাম পোস্টে প্রয়াত মা’কে স্মরণ করাটা তার একাকীত্বের প্রমাণ ছিল। অকালে চলে যাওয়ার কারণ যাই হোক, মেনে নিতে পারছেন না কেউই। 


সুশান্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেছিল বলিউড কেন যেন আমাকে আপন করে নেয় না। সুশান্তের নিরবে চলে যাওয়া সেই বলিউডের এলিট শ্রেণির প্রতি যেন এক তীব্র প্রতিবাদ। আর সেই প্রতিবাদের সুরেই  গর্জে উঠছে সাধারণ দর্শক। বলিউডে নেপটিজম বয়কটের ডাকই শুধু না বলিউডের এলিট শ্রেণিদের উপর ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন নেটিজেনরা। আর কোন প্রতিভাবান যেন এভাবে নেপটিজমের শিকার না হন তাই চলছে প্রতিবাদ।