How will the schools function post lockdown?

সব কিছুই কেমন যেন উলট-পালট হয়ে গেল কয়েকদিনেই। করোনা মহামারী কীভাবে সব কিছু পরিবর্তন করে দিলো নিমেষেই। শুধু যে প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই মহামারী তাই না, ধ্বংশ করে দিয়েছে প্রচলিত জীবন যাপন থেকে অর্থনীতি। পাল্টে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থাও। 


বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছে। এই ছুটির পর সারাদেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাকেন্দ্রে ফিরে গিয়ে এক নতুন পরিবেশের মুখোমুখি হবে। এই নতুনত্ব আসবে শ্রেণিকক্ষে, পরিবর্তন আসবে পাঠপ্রদানের ধরনে, বাড়বে রিমোট লার্নিং। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে শিশুরাও আগের মতো একসঙ্গে দলবেঁধে শ্রেণিকক্ষে যেতে পারবে না। সব মিলিয়ে উদ্ভূত এই নতুন পরিস্থিতিকে বৈশ্বিকভাবে ‘নিউ নরমাল’ নিয়ম হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর এর পূর্ণাঙ্গ চিত্রপট কেমন হবে— তা নিয়ে বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে সরকার।




বিদ্যালয়গুলি আবারও চালু হওয়ার সাথে সাথে এতদিন পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে শেখার যে পদ্ধতিটি ছিল তা বদলাতে চলেছে, এইচআরডি বিদ্যালয়ের শিক্ষাসচিব অনিতা করওয়াল শুক্রবার জোর দিয়ে বলেছিলেন যে কোভিড-১৯ মহামারী ডিজিটাল শিক্ষার দিকে আমাদের নিয়ে গেছে। 




দেশের 24 কোটিরও বেশি শিশু ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছে উল্লেখ করে মিসেস কারওয়াল বলেন, লকডাউন পরবর্তী বিশ্বের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উভয়কেই অনেক কিছু মানিয়ে নিতে হবে।




অশোক বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেছেন- "আমাদের সচেতন হতে হবে যে যখনই স্কুলগুলি আবার চালু হবে তখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং প্রচুর সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার," 




প্রসঙ্গত তিনি জানিয়েছেন ক্লাসরুমে শেখার পদ্ধতিটি পরিবর্তন হতে চলেছে এবং শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের এই পরিবর্তন গুলি মানিয়ে নিতে হবে। আর মানিয়ে নিতে কতদিন লাগবে কিংবা আগামী কিছু দিনে কি পরিবর্তন আসবে সে বিষয়ে কিছুই নিশ্চিত করে এখন বলা সম্ভব নয়।" 




মার্চ মাসে লকডাউন ঘোষণার সময় কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (সিবিএসই) চেয়ারম্যান এমএস কারওয়াল বলেছিলেন, “আমরা প্রথমে যে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম তা হল শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতা । এই সুস্থতার জন্য অনলাইনে বা অফলাইনে শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ”।




বিদ্যালয়গুলি পুনরায় চালু করার রোডম্যাপ সম্পর্কে মিসেস কারওয়াল বলেছেন, "আমরা এখন পুরো শিক্ষার প্রক্রিয়াটি, শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষামূলক প্রক্রিয়াটি, যেভাবে শিশুদের স্কুলে ডাকা হবে, সেটিকে পুনরায় সাজানোর চেষ্টা করছি। স্কুলে আসা ও যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়গুলিতে কী ঘটে, শিক্ষকদের পরিবর্তিত ভূমিকা কী হবে, আমরা এই সব নিয়ে কাজ করছি।




তিনি আরও বলেন- “প্রথমত, আমরা রাজ্যগুলিকে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিছু রাজ্য আমাদের জানিয়েছিল যে মুদ্রণের অনুমতি নেই, পরিবহন পাওয়া যায় না, তাই আমরা তাদের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছি এবং এমএইচএর অনুমতি চেয়েছি। এখন প্রায় সব রাজ্যই শিশুদের কাছে বই পাঠাতে সক্ষম হয়েছে বা পাঠানোর ব্যবস্থা চলছে। "




আবার অন্যদিকে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া কোভিড-১৯ মহামারীজনিত প্রেক্ষাপটে সতর্কতার সাথে বিদ্যালয়গুলি পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে সকল গ্রেডের সিলেবাসে ৩০ শতাংশ হ্রাসের কথা বলেছেন।




তিনি আরও বলেন যে অনলাইন শিক্ষাই কেবল বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিপূরক হতে পারে এবং এর কোন বিকল্প হতে পারে না। তবে সবার আগে, আমাদের বয়স বা সামাজিক শ্রেণি নির্বিশেষে প্রতিটি শিশুকে আশ্বস্ত করতে হবে যে তারা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের সকলেরই তাদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ের শারীরিক ও বৌদ্ধিক জায়গার সমান অধিকার রয়েছে। 



করোনা-পরবর্তী সময়ে কিছু পাঠ অফলাইন গতানুগতিক পন্থায় দেওয়া হলেও বাকি একটা বড় শতাংশ অন্তর্জাল-ভিত্তিক হতে চলেছে। অর্থাৎ করোনা-পরবর্তী ভারত অনলাইন শিক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেবে বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। যদিও এখনো গ্রামাঞ্চলে অনলাইন শিক্ষার কোন পরিকাঠামোই নেই। তাই এক্ষেত্রে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে সেটাই দেখার।