উন্নাও ধর্ষণের ঘটনায়  যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের। আজ তাকে সাজা শোনাল দিল্লির তিস হাজারি কোর্ট । এছাড়া নির্যাতিতাকে ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার এই মামলায় কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে দোষীসাব্যস্ত করে আদালত। এর পাশাপাশি শশী সিংকেও  দোষী বলে জানায় আদালত। শশী সিং নির্যাতিতাকে চাকরি দেওয়ার নাম করে সেঙ্গারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর সেখানেই নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করা হয়। আজকের রায়ে আদালত সিবিআইকে নির্যাতিতার প্রাণ সংশয় রয়েছে কি না তা দেখার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারকে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও নিরাপদ স্থানে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে।

উন্নাও অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায়  মূল অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে  সোমবার দিল্লির তিস হাজারি কোর্টে তোলা হয়। ধর্ষণ মামলায় তিহার জেলে বন্দি ছিলেন কুলদীপ সিং সেঙ্গার। গত ৩ অক্টোবর সিবিআই এই ধর্ষণ মামলার চার্জশিট পেশ করেছে। সেখানে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতাকে ২০১৭ সালে অপহরণ করে টানা নয় দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়। তিনজন অভিযুক্ত তারউপরে নারকীয় অত্যাচার চালিয়েছিল। ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে ২০১৮ সালের এপ্রিলে। যখন ওই বালিকা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির বাইরে নিজেকে জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেন, তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে পুলিশ তাঁর অভিযোগ নিচ্ছে না। গত জুলাই মাসে একটি গাড়িতে করে কাকিমা ও আইনজীবীর সঙ্গে নির্যাতিতা যখন রায়বেরেলি আদালতে যাচ্ছিলেন, তখন একটি ট্রাকের সঙ্গে তাঁদের গাড়িটির ধাক্কা লাগে। এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ওই নাবালিকা। আইনজীবী ও নির্যাতিতা গুরুতর আহত হলে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘনায় নির্যাতিতার কাকিমার মৃত্যু হয়। লখনউয়ের হাসপাতালে নির্যাতিতার অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দিল্লির এইমসে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হন তিনি। সাংবাদিকদের জানান, কুলদীপ সেঙ্গারের লোকজন সুপরিকল্পিতভাবেই হামলা চালিয়েছে।

এই ঘটনায় এফআইআর অনুযায়ী নির্যাতিতা প্রতিবাদ করলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। পুরো পরিবারকে উড়িয়ে দিয়ে তাঁকেও পুঁতে দেওয়া হবে। অভিযোগ, যখন তাঁকে ধর্ষণ করা হচ্ছিল, তখন ওই বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল শাস্ত্রী। ঘটনার সাত দিন পরে ওই নাবালিকাকে একটি এসইউভি গাড়িতে করে অপহরণ করে নিয়ে যায় তিন ব্যক্তি। সেখানে তাঁকে পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে পান করিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। নারকীয় অত্যাচারের পর বিভিন্ন ঠিকানায় ঘুরিয়ে নির্যাতিতাকে বিক্রির চেষ্টা করছিল সেঙ্গারের লোকজন। এরপর নির্যাতিতার বাবাকে প্রথমে খুন করা হয়। পরে কাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর নির্যাতিতার পুরো পরিবারকে খুন করার পরিকল্পনা হলেও তাতে সফল হয়নি সেঙ্গার ও তার লোকজন।

সংবাদ একলব্য সংবাদটি সম্পাদনা করেনি-সরাসরি নিউজ ফিড থেকে সংগৃহীত।