হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফোনে ঢুকে পড়া ইজরায়েলের স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ১২১ জন ভারতীয়কে লক্ষ্য করা হয়েছিল। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ফেসবুকের মালিকানাধীন সংস্থা হোয়াটসঅ্যাপ ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে এমনটাই জানিয়েছিল বলে  সূত্রের খবর। ওই সূত্রের মতে, গোপনীয়তা লঙ্ঘনের বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো মে মাসের পরে দ্বিতীয় সতর্কতা ছিল এটি। সুরক্ষা লঙ্ঘন সম্পর্কে ১২১ জন ভারতীয় ব্যবহারকারীর সকলকেই সতর্ক করা হয়েছিল। 


ব্যবহারকারীর মেসেজ, ফোন এবং পাসওয়ার্ডের অ্যাক্সেস দেওয়ার জন্য পেগাসাস কোনও ভিডিও কলের সময় ফোনের অপারেটিং সিস্টেমটি হ্যাক করে নেয় বলে অভিযোগ। ফোনটি বেজে ওঠার সাথে সাথেই আক্রমণকারী একটি স্পাইওয়্যার কোড পাঠায় এবং ব্যবহারকারী ফোনটি না ধরলেও স্পাইওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায়। ফলে আক্রমণকারী ব্যবহারকারীর হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ এবং ফোন, নিয়মিত ভয়েস কল, পাসওয়ার্ডগুলি, কনট্যাক্ট লিস্ট, ক্যালেন্ডারের ইভেন্ট, ফোনের মাইক্রোফোন এবং ক্যামেরায় অ্যাক্সেস পায়। ঘরে বসে অন্যের কথোপকথন শুনতে পারবেন মোবাইল ফোনকে এমন মাইক্রোফোনেও রূপান্তর করতে পারে পেগাসাস।


কিছু মানবাধিকার কর্মী এই হ্যাকিংয়ের পিছনে সরকারের হাত দেখেছেন। এই অভিযোগ অস্বীকার করে, শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “ভারত সরকার মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপে ভারতের নাগরিকদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা লক্ষাধিক ভারতীয় নাগরিকের কী কী গোপনীয়তা লঙ্ঘন হয়েছে এবং তা রক্ষার জন্য সংস্থাটি কী করছে তার ব্যাখ্যা চেয়েছি হোয়াটসঅ্যাপের থেকে। সরকার সমস্ত ভারতীয় নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” ভারতে এখন ৪০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের। শুক্রবার ফেসবুকের মালিকানাধীন এই সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মে মাসে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করার পরে তারা বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ করছে।

“আমাদের সর্বোত্তম অগ্রাধিকার হ'ল হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা। মে মাসে আমরা দ্রুত একটি সুরক্ষা সমস্যা সমাধান করেছি এবং সংশ্লিষ্ট ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক সরকার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি,” এক বিবৃতিতে বলেন সংস্থার এক মুখপাত্র। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “তার পর থেকে আমরা এনএসও গ্রুপ হিসাবে পরিচিত আন্তর্জাতিক স্পাইওয়্যার ফার্মটিকে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের করার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে একমত যে এই বিষয়টি সমালোচনামূলক এবং আমরা একসঙ্গে হ্যাকারদের সুরক্ষা দুর্বল করার চেষ্টা করে ব্যবহারকারীদের রক্ষার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। হোয়াটসঅ্যাপ সমস্ত ব্যবহারকারীর মেসেজে সুরক্ষার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
সরকারের তরফে অবশ্য এই দাবিগুলিকে অস্বীকার করে বলা হয়েছে যে, হোয়াটসঅ্যাপ সবেমাত্র মে মাসে তাঁদের অ্যাপ্লিকেশনটির প্রযুক্তিগত দুর্বলতা সম্পর্কে অবহিত করেছিল এবং সংস্থাটি পেগাসাস স্পাইওয়্যার এবং ভারতীয় ব্যবহারকারীদের টার্গেট করার বিষয়ে কোনও উল্লেখই করেনি।


সূত্রঃ ndtv