সংবাদ একলব্য, ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ঃ আবারও ভাঙন ধরল তৃণমূলের ঘরে। ভাঙনের পথ উঁকি দিচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। এবার তা নিশ্চিত হয়েই গেল। আগামী কাল মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত।নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অমিত শাহের সভায় সব্যসাচী আনুষ্ঠানিক ভাবে দলবদল করতে চলেছেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে এমনকি বিধায়ক নিজেও স্বীকার করেছেন সে কথা।

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আগামী কাল একটি দলীয় বৈঠক এবং সভা করবেন অমিত শাহ। সেখানকার কর্মসূচি সেরে যাবেন বিধাননগর, বিজে ব্লকের দুর্গোৎসবের উদ্বোধন হবে শাহের হাতে। তার আগেই বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়রকে গেরুয়া পতাকা ধরানোর পর্ব সেরে ফেলা হবে বলে বিজেপি সূত্রের খবর।
মুকুল রায়ের সঙ্গে যখন থেকে তৃণমূলের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে, তখন থেকেই সব্যসাচীও নানা ভাবে বিড়ম্বনায় ফেলতে শুরু করেছিলেন দলকে। বরাবরই মুকুল ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। তাই মুকুল রায়ের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ছিন্ন হলেও, সব্যসাচী মুকুলকে ছাড়েননি। কখনও বাড়িতে, কখনও নিজের ক্লাবে মুকুল রায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। কখনও নিজে গিয়ে মুকুলের সঙ্গে দেখা করেছেন। কখনও আবার নির্দিষ্ট কোনও ইস্যুতে নিজের দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন।

অবশেষে জুলাই মাসে সব্যসাচীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। তাঁকে বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে সরানোর তোড়জোড় শুরু হয়। ১৮ জুলাই সব্যসাচী নিজেই ইস্তফা দেন মেয়র পদে। তাঁর দলবদলের জল্পনা আরও বাড়ে। কিন্তু এই ইস্তফার কয়েক দিনের মধ্যেই মধ্যমগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির হয়ে সব্যসাচী দত্ত আবার চমকে দেন।
বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়রের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক শুধরে নেওয়ার তাগিদে ওই প্রশাসনিক বৈঠকে সব্যসাচী যাননি। যত দিন না বিজেপিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিচ্ছেন, তত দিন দলে থেকেই দলকে অস্বস্তিতে ফেলার কৌশল নিয়েছিলেন তিনি।
সব্যসাচী দত্ত কিন্তু তৃণমূলের অস্বস্তি সত্যিই বাড়াচ্ছিলেন। মাঝে দিল্লি গিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছিলেন তিনি। তার পরে নিজের এলাকায় গণেশ পুজোর উদ্বোধন করিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, অরবিন্দ মেননদের দিয়ে। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদীর সাফল্য কামনা করে যজ্ঞও করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বিজেপিতে যোগ দেওয়া যে আশু, তৃণমূল বিধায়ক তা বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছিলেন খুব স্পষ্ট ভাবে।