মধুসূদন রায়, ময়নাগুড়ি, ২৫ অগাস্ট ২০১৯: অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মায়ের মৃত্যু দেখেছিলেন করিমুল হক, সময় মতো মাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেননি তাই তার মায়ের মৃত্যু হয় বলে তিনি মনে করেন। নিজের মাকে হারিয়ে সেইদিন তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, অ্যাম্বুল্যান্সের কারণে আর কারও যেন মৃত্যু না হয়। চা বাগানের সামান্য মাইনে থেকেই টাকা জমিয়ে অনেক কষ্টে একটি মোটরবাইক কেনেন করিমুল হক। সেটিকে অ্যাম্বুল্যান্স বানিয়ে আশেপাশের প্রায় কুড়ি পঁচিশটা গ্রামের মানুষের সেবা করতে নিজেকে নিয়োজিত করেন, কোনরুপ পারিশ্রমিক ছাড়াই। যখনই কারও অসুস্থতার কথা তিনি শুনতে পান, সঙ্গে সঙ্গে চা শ্রমিকের কাজ ছেড়ে রোগীকে নিজের বাইকে করে হাসপাতালে নিয়ে যান 'অ্যাম্বুল্যান্স দাদা' করিমূল হক।
তাঁর নিঃস্বার্থ এই সমাজসেবাকে স্বীকৃতি দিয়ে ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সন্মানে সন্মানিত করে। গোটা দেশে কুর্নিশ জানিয়েছে তাঁকে। শুধু অ্যাম্বুল্যান্স করে সহায়তাই নয়, তার সাধ্যমতো তিনি নিজের বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধপত্র রেখে এলাকার মানুষকে পরিষেবা ও বেশ কয়েক জন শারীরিক প্রতিবন্ধীর জন্য আবাস তৈরি করে তাদের সেবা চালাচ্ছেন।
অভাবের সংসার করিমুল হকের। রোজগার বলতে চা শ্রমিকের কাজ করে আয় কেবল মাত্র পাঁচ হাজার টাকা, সেই টাকায় কোন ক্রমে সংসার চালান।আর এই 'অ্যাম্বুল্যান্স দাদা' করিমূল হকেরই এখন চরম দুর্দশা। গত দু-তিন মাস ধরে করিমুল চোখ নিয়ে মারাত্মক সমস্যায় ভুগছেন। একমাস আগে তাঁর ডান চোখের অপেরেশন হলেও বাম চোখে তিনি এখন কিছুই দেখতে পারছেন না। শিলিগুড়িতে চিকিৎসা করালেও চক্ষু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাঁর চোখে বিরল জটিল রোগ হয়েছে। এই রোগ ভারতে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২ জনের হয়েছে। এর চিকিৎসার জন্য এক একটি ইঞ্জেকশনের খরচ কুড়ি হাজার টাকা। এই ইঞ্জেকশন প্রতিমাসে একটি করে দিতে হবে। কিন্তু করিমুলের সে সামর্থ্য নেই। যে কারণে প্রায় অন্ধ হতে বসেছেন তিনি।
পদ্মশ্রী সন্মান স্বরূপ স্মারক, মেডেল, শংসাপত্র পেলেও কোনও আর্থিক পুরস্কার তিনি পাননি। ব্যাক্তিগতভাবে কয়েকজন ও কয়েকটি সংস্থা’র থেকে কিছু আর্থিক পুরস্কার পেলেও, তা সাধারণ মানুষের সেবাতেই খরচ করেছেন তিনি। চিকিৎসার জন্যে তাঁর হায়দ্রাবাদ যাওয়ার কথা। কিন্তু তাঁর যে সামর্থ্য নেই। সেক্ষেত্রে বাংলার তথা দেশের মানুষই তাঁকে সাহায্য করতে পারেন।
যার অ্যাম্বুল্যান্সের কনসেপ্ট তাঁরই মস্তিষ্ক প্রসূত। তিনি জলপাইগুড়ির করিমুল হক। সেই পদ্মশ্রী প্রাপক কারিমুলই এখন চোখের জটিল সমস্যায় ভুগছেন। আর অভাবের কারণে করতে পারছেন না সামান্য চিকিৎসাও।
আপনারা যারা করিমুল হককে সাহায্য করতে চান, সেক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া রইল:
NAME: KARIMUL HAK
BRANCH BOULBARI.
ACCOUNT NO: 32598217925
IFSC: SBIN0009700
STATE BANK OF INDIA

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊