৬০ এ ৬০ পেয়েও ইন্টারভিউ এ ডাক মিললো না বহু পরীক্ষার্থীর, SSC -এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ স্যোসাল মিডিয়া জুড়ে
কলকাতা, ১৬ নভেম্বর ২০২৫:
পশ্চিমবঙ্গ সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন (The West Bengal Central School Service Commission) কর্তৃক আয়োজিত ২য় এসএলএসটি (SLST) সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা, ২০২৫ (একাদশ-দ্বাদশ স্তর)-এর প্রাথমিক ইন্টারভিউ তালিকা (Preliminary Interview List) প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত এই তালিকায় বিষয়ভিত্তিক, ক্যাটাগরিভিত্তিক এবং লিঙ্গভিত্তিক মোট শূন্যপদের বিপরীতে ইন্টারভিউয়ের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম, রোল নম্বর এবং প্রাপ্ত নম্বর বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিটি পরীক্ষার্থীর মোট প্রাপ্ত নম্বর নিম্নলিখিত তিনটি অংশের স্কোরের সমন্বয়ে গঠিত:
১. OMR (লিখিত) পরীক্ষার মার্কস
২. শিক্ষাগত যোগ্যতার স্কোর (Educational Qualification Score)
৩. অভিজ্ঞতার স্কোর (Experience Score)
প্রকাশিত তালিকা থেকে বিভিন্ন বিষয় এবং ক্যাটাগরির কাটঅফ (মোট নম্বর) বিশ্লেষণ করলে নিম্নলিখিত প্রবণতাগুলি লক্ষ্য করা যায়:
- সর্বোচ্চ কাটঅফ মার্কস: কয়েকটি ক্যাটাগরিতে কাটঅফ মার্কস তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। যেমন: URDU (PG) বিষয়ের OBC-B (Male/Female) ক্যাটাগরির কাটঅফ ছিল ৭৪।
- কম্পিটিশন: যে বিষয়গুলিতে শূন্যপদের সংখ্যা কম বা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, সেগুলিতে কাটঅফ মার্কস সাধারণত বেশি দেখা গেছে। যেমন:
- CHEMISTRY (PG) -এর GEN (Male/Female) ক্যাটাগরির কাটঅফ ৬৭।
- MATHEMATICS (PG) -এর OBC-B (Male/Female) ক্যাটাগরির কাটঅফ ৬৭।
তুলনামূলকভাবে কম কাটঅফ: কিছু বিষয়ে সাধারণ ক্যাটাগরিতেও অপেক্ষাকৃত কম কাটঅফ লক্ষ্য করা গেছে। উদাহরণস্বরূপ:
- ACCOUNTANCY (PG) বিষয়ের GEN (Male/Female) ক্যাটাগরির কাটঅফ ৬২।
- URDU (PG) বিষয়ের EWS (Male/Female) ক্যাটাগরির কাটঅফ ছিল ৬৫।
অর্থাৎ ফ্রেশারদের জন্য এই পরীক্ষা একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে। যোগ্য বাতিল হওয়া শিক্ষকদের অভিজ্ঞতার নাম্বার হিসাবে ১০ যোগ হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। যদিও এই বিষয়টি পূর্বেই বলা হয়েছিল। একদিকে আসন সংখ্যা কম অপরদিকে অভিজ্ঞতার নাম্বার যোগ হওয়ায় বোঝাই যাচ্ছিল পিজি লেভেলের পরীক্ষায় নতুনদের সুযোগ থাকবে নামমাত্র। কিন্তু দীর্ঘদিন পর রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হওয়ায় আশায় বুক বেধেছিল নতুনরা।
গতকাল ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশিত হওয়ার পর আশঙ্কাই সত্য হলো, ৬০ এ ৬০ পেয়েও এবং একাডেমিক ১০ এ ১০ পেয়েও অনেক পরীক্ষার্থী বঞ্চিত থাকলো। যা নিয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
অধ্যাপক জয়দীপ সরকার তার স্যোসাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন- "লিখিত পরীক্ষায় ৬০ এ ৬০ পেয়েছে, ১০ এ ১০ তার অ্যাকাডেমিক স্কোর, তবুও যদি কেউ দ্বিতীয় রাউন্ডে ডাক না পায়, তারপর ছাত্রছাত্রীদের পড়তে বলব কোন অধিকারে? ক্লাসে ছাত্র থাকে না, ছাত্রদের দোষ দেব কি করে? যোগ্য চাকরিহারারা চাকরি ফিরে পাক, আন্তরিক চাওয়া সবসময়, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির শিকার ছিল তারা, কিন্তু পাশাপাশি নবীন ছাত্রদের জীবন নিয়ে অসহায় বোধ করছি। দশ বছর পর একটা সুযোগ এসেছিল যে ছেলেমেয়েদের জীবনে, শেষ সুযোগ অনেকেরই, কি করে নিজেদের পড়াশুনায় থিতু রাখবে আর?"
শিক্ষক আশানূর আলম তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন- "60 টে 60 পেলে কি চাকুরি হয়! 60 এর পরীক্ষায় কমপক্ষে ৬৫-৭০ পেতেই হবে। হ্যাঁ, চিটফান্ডের একটা দোকান বন্ধ হলেও চিটিং যেমন বন্ধ হয়নি , তেমনি দুর্বৃত্তের কখনো ছলের অভাব হয়না। সময় ও পরিশ্রম তো ব্যাক হবে না। তবে SSC ফর্ম কেনার টাকাটা তোমরা দাবি করতেই পারো। তোমাদের চেয়েও অনেক অসহায় মানুষ, পশু রাস্তায় না খেয়ে পড়ে থাকে। দুটো বিস্কুট কিনে দিলেও মনে একটা তৃপ্তিবোধ আসবে।"
এরকম প্রশ্ন,ক্ষোভ স্যোসাল মিডিয়ায় ভরে গেছে। যোগ্য বঞ্চিত শিক্ষকদের অভিজ্ঞতার ১০ নাম্বার এর সাথে অসম লড়াইয়ে নেমেছিলেন নতুনরা, তারই পরিণতি এদিনের ফলাফল বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊