সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় সমস্ত ই-রিক্সা (টোটো)র রেজিস্ট্রেশন করার দাবি
শোরুম থেকে বাহন পোর্টালের মাধ্যমে কোন ই- রিক্সা (টোটো)র রেজিস্ট্রেশন না করে টিটিইএন পোর্টালের মাধ্যমেই সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় সমস্ত ই-রিক্সা (টোটো)র রেজিস্ট্রেশন করার দাবি নিয়ে বুধবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দপ্তর ঘেরাও করল সিআইটিইউ অনুমোদিত ই-রিকশা চালক ইউনিয়ন।
এদিন জলপাইগুড়ি শহরের মাদ্রাসা ময়দান থেকে ডিবিসি রোড, থানা মোড়, বড় পোস্ট অফিস মোড় হয়ে মিছিল করে টোটো চালকরা ডিএম অফিসে পৌঁছান। সেখানে তাদের মিছিল পুলিশ আটকালে পুলিশের সঙ্গে বচসা হয় টোটো চালকদের। টোটো চালকরা ডিএম অফিসের গেটে বসে বিক্ষোভ দেখান এবং স্লোগান চলতে থাকে। পরে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেনারেল)-কে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন শ্রমিক নেতা শুভাশিস সরকার, কৃষ্ণ সেন, দুলাল রায়, তোতাই কর, সুবরণ সরকার, নিখিল সরকার, নারায়ন কুন্ডু প্রমূখ।
আমাদের রাজ্যে ই-রিক্সা (টোটো) এক জনপ্রিয় পরিবহন। পরিবেশবান্ধব, দূষণমুক্ত, স্বল্প খরচের এক সাধারন জন পরিবহন। রাজ্যে উপযুক্ত কাজের বেড়ে চলা অভাবের মধ্যে স্বল্প বিনিয়োগের এক বিশাল স্বনির্ভর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এই পরিবহন। অথচ এই টোটো চালকদের ওপর পুলিশি ও প্রশাসনিকসহ বেসরকারি হেনস্থা, হয়রানি, তোলা আদায় প্রায় নিত্য ঘটনা।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহন দপ্তর ই-রিক্সা (টোটো) সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে এক বছরের জন্য ১৭৪০ টাকা এবং দুই বছরের জন্য ২৯৪০ টাকা ফি দিয়ে প্রতিটি টোটোকে নথিভুক্তকরুন/ নিবন্ধীকরণের কথা বলা হয়েছে। ই-রিক্সার ক্ষেত্রে এই নিবন্দীকরণ শোরুমগুলি থেকে করতে হবে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন শোরুমগুলি ই-রিক্সা চালকদের থেকে বিভিন্ন রকম অর্থ দাবী করছে এবং বিভিন্ন জেলার ক্ষেত্রেও এই অর্থের পরিমাণ বিভিন্ন রকম। নথিভূক্তকরণের শেষ সীমা বলা হয়েছে ৩০ শে নভেম্বর। এত কম সময়ে বর্তমানে সচল টোটোগুলির নথিভুক্তকরণ কখনোই সম্ভব নয়। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সাধারণ কারখানায় প্রস্তুত টোটো দুই বছরের মধ্যে বদল করে সরকার স্বীকৃত সংস্থা থেকে নতুন ই- রিক্সা ক্রয় করতে হবে। ইতিপূর্বে জেলার বিভিন্ন পৌরসভা টোটো রেজিস্ট্রেশনের নামে টোটো চালকদের থেকে নানাবিধ অর্থ সংগ্রহ করেছে।
পরিবহন দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকেই সারা রাজ্যজুড়ে এই কালা পরিবহন আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় আছেন টোটো চালকরা। বেশিরভাগ টোটো চালক (ই- রিক্সা) এখনো পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করেননি, মূলত অত্যাধিক রেজিস্ট্রেশন ফি-র কারণে। খুবই স্বল্প সংখ্যক টোটো চালক টিটিইএন পোর্টালের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১৭৪০ টাকা অনলাইনে জমা করলেও তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এমনকি তাদের টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। ই-রিকশা চালক ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস সরকার বলেন এটা সরকারি আর্থিক দুর্নীতি ।
টোটো চালকদের স্বার্থে শুভাশিস বাবু দাবি করেন, ই-রিক্সা (টোটো) চালকদের সরকারি স্বীকৃতি ও সামাজিক মর্যাদা দিতে হবে, টোটো/ ই- রিক্সার ভেদাভেদ করা চলবে না, এককালীন সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় টিটিইএন(TTEN) পোর্টালের মাধ্যমেই সব গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, শোরুম থেকে বাহন পোর্টালের মাধ্যমে কোনো রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না, রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা অন্তত ৬ মাস বৃদ্ধি করতে হবে, পৌরসভায় নেওয়া সব টাকা ফেরৎ দিতে হবে, নতুন ই- রিক্সা (টোটো) কেনার জন্য সহজ শর্তে ভর্তুকিযুক্ত সরকারি ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিষয়গুলি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন টোটো চালকরা। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সময়সীমা বৃদ্ধি না করে ৩০ নভেম্বরের পর যদি কোন টোটো চালককে হেনস্থার শিকার হতে হয়, তাহলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভাশিস বাবু।
.webp)
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊