অসহায় আত্মসমর্পণ! দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে চুনকাম গেল ভারতীয় ক্রিকেট টিম
অসহায় আত্মসমর্পণ! দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে চুনকাম গেল ভারতীয় ক্রিকেট টিম। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের শেষ ইনিংসে মাত্র ১৪০ রানে গুটিয়ে গেল ভারত। ইডেনের পর এবার গুয়াহাটিতে টেস্ট ম্যাচে ৪০৮ রানে হারল ভারত। ব্যাট-বল-ফিল্ডিং সবেতেই ব্যর্থ ভারতীয় ক্রিকেট দল।
শেষ দিনের সকাল থেকেই ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল প্রায় অসম্ভব। জয়ের জন্য দরকার ৫২২ রান, যা বাস্তবে সম্ভব নয় বললেই চলে। কিন্তু প্রকৃত চাপ ছিল সারাদিনে ৮ উইকেট ধরে রাখার উপর। বর্তমান ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা বিবেচনা করলে, পুরো একদিন টিকে থাকা যে দুঃসাধ্য, তা পন্থ-নীতীশদের পারফরম্যান্স ফের প্রমাণ করে দিল। লাঞ্চের আগেই ভারতের ব্যাটিং বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং ২৫ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ সহজেই জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে এত বড় ব্যবধানে কখনও টেস্ট হারেনি ভারত।
টসে হার পন্থের নিয়ন্ত্রণে ছিল না বটে, কিন্তু তার পরের সিদ্ধান্তগুলো যেন বারবার ভুলের দিকে নিয়ে গেছে ভারতকে। দল নির্বাচন থেকে বোলিং রোটেশন, ফিল্ড সেটিং প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধরা পড়েছে বিশৃঙ্খলা। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে পৌঁছে যায় ৪৮৯ রানে। সেখানে ভারতীয় ব্যাটারদের লড়াই বলতে প্রায় কিছুই ছিল না। প্রথম ইনিংসেই দল অলআউট ২০১। ব্যাটারদের মধ্যে দৃঢ়তা, ক্রিজ দখলে রাখার মনোভাব কিছুই দেখা গেল না। এমন সময়ে মার্কো জানসেনের ব্যাট-বলের প্রভাব দেখে শন পোলকের কথা মনে পড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
দ্বিতীয় ইনিংসেও চিত্র পালটায়নি। কুলদীপদের বিরুদ্ধে সুইপ–রিভার্স সুইপের বন্যা বইয়ে ২৬০ রান তুলে ফেলে প্রোটিয়ারা। মনে হচ্ছিল তাঁরা হয়তো ঘোষণা করতে দেরি করছেন। কিন্তু ভারতের দুই ওপেনারের দ্রুত পতন বুঝিয়ে দেয় টেম্বা বাভুমার সিদ্ধান্ত ছিল একদম ঠিক। জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫৪৯ রান। চতুর্থ দিনের শেষে ভারতের সংগ্রহ ২৭/২। পঞ্চম দিনে লাঞ্চের আগেই ধসে পড়ে সমস্ত আশা।
রবীন্দ্র জাদেজা (৫৪) চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পাশে কেউ ছিলেন না যিনি স্পিনটাকে সামলে দিতে পারেন। ঋষভ পন্থ (১৩), ধ্রুব জুরেল (২) প্রথম ইনিংসের কোনও শিক্ষা তাঁদের কাছে ধরা পড়েনি। প্রশ্ন উঠছে, টেস্ট ব্যাটিংয়ের মৌলিকতা কি ভুলেই গিয়েছেন তাঁরা? প্রত্যেকেই যেন নিজের মতো করে আউট হওয়ার নতুন উপায় বার করেছেন। সামান্য টার্ন বা বাউন্স দেখলেই স্লিপে ক্যাচ দেওয়া যেন নিত্যদিনের ঘটনা। সাইমন হার্মারের (৬/৩৭) স্পিনে ব্যাটারদের হিমশিম খাওয়া স্পষ্ট। নীতীশ রেড্ডির (০) দলের ভূমিকাও নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
পরপর দ্বিতীয় বছর নিজেদের মাটিতে টেস্ট সিরিজে ভারতকে ‘চুনকাম’ হতে হল গত বছর নিউজিল্যান্ডের কাছে ৩-০, এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২-০। দেশের মাটিতে ভারতের এমন বিপর্যয় ইতিহাসে মাত্র তিনবার; এর মধ্যে দু’বারই গম্ভীরের আমলে। এবার এল সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা।
এখন প্রশ্ন, এই দিশাহীন ভারতীয় ক্রিকেটকে ঠিক কোন পথে নিয়ে যাবেন প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর?

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊