ঢাকায় পরপর বিস্ফোরণ, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ও সেনা মোতায়েনের আবহে শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা
২০২৫ সালের ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করতে চলেছে। তার আগের রাতেই ঢাকায় একাধিক বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ‘শুট অ্যাট সাইট’ নির্দেশে গোটা শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক।
রবিবার গভীর রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পরপর বিস্ফোরণ ঘটে। রয়টার্স সূত্রে জানা গেছে, থানা সংলগ্ন এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মহম্মদ ইউনুসের এক পরামর্শদাতার বাড়ির বাইরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তিতুমীর কলেজের মূল ফটকের সামনে এবং আমতলি মোড় এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটে। আরও বেশ কিছু এলাকায় বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাত দেড়টা নাগাদ শুরু হওয়া এই অশান্তি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাজ্জাত আলি নির্দেশ দিয়েছেন, কেউ যদি ককটেল বোমা ছোড়ে বা বাসে আগুন ধরায়, তাহলে দেখামাত্র গুলি চালাতে হবে। এই নির্দেশের পর শহরে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী BGB। সুপ্রিম কোর্ট সেনাবাহিনীর মোতায়েনের জন্য সেনাসদরে চিঠি পাঠিয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, বিচারপতি গোলাম মোরতুজা মোজুমদারের নেতৃত্বে, সোমবার সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে রায় ঘোষণা করবে। শেখ হাসিনা-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এই রায়কে ঘিরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বড় পর্দায় সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আওয়ামি লিগ ইতিমধ্যেই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির তরফে আশঙ্কা করা হচ্ছে, রায় ঘোষণার দিন আরও নাশকতা ছড়ানো হতে পারে। এই আশঙ্কা সত্যি করে রবিবার রাত থেকেই বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগে কেঁপে উঠেছে ঢাকা।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, নিরাপত্তা সংকট এবং বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে চলা এই বিচার এবং তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা আগামী দিনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊