বাবা-মা হারা তরুণীর দায়িত্ব নিয়ে বিয়ে দিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী রাতুল বিশ্বাস
বাবা-মা হারা তরুণীর বিয়ের দায়িত্ব নিলেন আলিপুরদুয়ারের বিশিষ্ট সমাজসেবী রাতুল বিশ্বাস। পায়েলের বিয়ের প্রায় সমস্ত খরচ এমনকি কন্যাদান পর্যন্ত করলেন তিনি নিজেই। বিয়ে নিয়ে যখন চিন্তিত ছিলেন পরিবার সেই সময় ত্রাতার ভূমিকায় এসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রাতুল। মঙ্গলবার রাতে আলিপুরদুয়ার ২ নং ব্লকে মিনু বর্মনের বাড়িতে বসেছিল বিয়ের আসর। বিয়েতে খাওয়া দাওয়া থেকে প্রায় সমস্ত খরচ বহন করেছেন রাতুল বিশ্বাস, এমনকি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পায়েলের বিয়ে দিয়েছেন। করেছেন সম্প্রদানও । তার এই মানবিক উদ্যোগকে প্রশংসায় ভরিয়েছেন সকলেই।
জানা যায়, বয়স যখন প্রায় ১ বছর, হঠাৎ করে মা মারা যায় পায়েলের। এরপর তার বাবা মেয়েকে পাশের বাড়ির এক মহিলার হাতে তুলে দেন। কিছুদিন পরে তার পিতা আত্মঘাতী হন। বাবা-মা হারা সেই সন্তান মিনু বর্মনের কোলে পিঠে ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠে। আলিপুরদুয়ার ২ নং ব্লকের ভাষার ডাবরী এলাকায় বাড়ি পায়েল বর্মনের। পালিত মা মিনু বর্মন এর সঙ্গে সেখানেই সেই বাড়িতেই থাকত সে। এবার পায়েলের জাঁকজমক করে বিয়ের আয়োজন হলো। মায়ের বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে শ্বশুর বাড়ি। কিন্তু মিনুর কোলে বড় হওয়া পায়েল কোনদিনও বুঝতে পারেনি এই মা তার আসল মা নয়। পায়েলকে নিজের মেয়ের মতোই আগলে রেখেছিল মিনু বর্মন। তার স্বামী ও মারা গিয়েছেন। নিজের ছেলের সঙ্গে কষ্ট করে বড় করে তুলেছে পায়েলকে। সম্প্রতি তার জন্য সম্বন্ধ এসেছে কোচবিহারের রামপুর থেকে। কিন্তু বিয়েতে তো অনেক খরচ? কিভাবে সামলাবেন এত কিছু? পাড়া প্রতিবেশী অনেকেই সহযোগিতা করলেও বিয়ের মোটা অংকের খরচ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন মা মিনু বর্মন। ভেবেছিলেন নম নম করে মেয়ের বিয়ে দেবেন অথবা ছেলের বাড়ির হাতে মেয়েকে উঠিয়ে দিতে হবে। ঠিক সেই সময়ই এই খবর কোনোভাবে পৌঁছে যায় রাতুল বিশ্বাসের কানে। আলিপুরদুয়ার নিবাসী সকলের পরিচিত শিক্ষক,তথা মানবিক মুখের সম্পাদক রাতুল বিশ্বাস ছুটে আসেন সেই মেয়ের বিয়েতে সহযোগিতা করতে। বিয়ের একটা বড় অংশের খরচার পাশাপাশি পায়েলের কন্যাদানও করে সে। সকাল থেকেই পায়েলের বাড়িতে বিয়ের সমস্ত দেখাশোনার করছিল রাতুল। বিয়েতে ছিল প্রায় ৩০০ জন অতিথি। ভাত ডাল আলু চিংড়ি কাতলা মাছের কালিয়া দই মিষ্টি চাটনি থেকে ব্যান্ড পার্টি ছিল বেশ ভালই আয়োজন। ২৫ শে নভেম্বর রাতে রামপুর নিবাসী সম্রাট প্রধান এবং পায়েল বর্মনের চারহাত এক হয়। রাতুল বিশ্বাসের এই মানবিক উদ্যোগ কে প্রশংসায় ভরিয়েছেন সকলেই। পাড়া প্রতিবেশী থেকে সকলেই পায়েলের বিয়েতে এসে তাকে দুহাত ভরে আশীর্বাদ করে।
এইভাবে এত আয়োজনে নিজের বিয়ে হবে স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি পায়েল এবং তার মা মিনু বর্মন।
রাতুল বিশ্বাস জানান, এই আনন্দ আয়োজনে থাকতে পেরে আমি খুবই খুশি। পায়েল এবং সম্রাট খুব ভালো থাকুক, ওদের আগামী জীবন সুন্দর হয়ে উঠুক এটাই প্রার্থনা করব।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊