ভয়ংকর ষড়যন্ত্র! ড্রোনের মাধ্যমে ভারতে শত শত আধুনিক অস্ত্র পাচার!

ভয়ংকর ষড়যন্ত্র! ড্রোনের মাধ্যমে ভারতে শত শত আধুনিক অস্ত্র পাচার! 

ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এক ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের তথ্য সামনে এসেছে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সহায়তায় ড্রোনের মাধ্যমে ভারতে শত শত আধুনিক অস্ত্র পাচার করা হচ্ছে। PX-5.7 এবং PX-3 ধরনের বিদেশি পিস্তল, যেগুলোর দাম ১০ লক্ষ টাকারও বেশি, এখন ভারতের গ্যাংস্টারদের হাতে পৌঁছাচ্ছে। এই অস্ত্রগুলি বিশ্বব্যাপী বিশেষ বাহিনী ব্যবহার করে এবং এর কার্যক্ষমতা একে AK-47-এর মতো ভয়ংকর করে তোলে।

ক্রাইম ব্রাঞ্চ সূত্রে জানা গেছে, গত দেড় বছর ধরে পাঞ্জাব সীমান্ত দিয়ে ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র পাচার চলছে। অমৃতসরের নির্জন এলাকাগুলিতে GPS লোকেশন পাঠিয়ে অস্ত্র নামানো হয়। প্রথমে ছোট ড্রোনে ভিডিও ও ছবি তুলে পাঠানো হয়, তারপর বড় ড্রোনে অস্ত্র আসে। প্রতি ১০–১৫ দিনে একটি চালান পৌঁছায়, যা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গ্যাংস্টারদের কাছে সরবরাহ করা হয়।

তিন সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। সোনু খাত্রি ও জসপ্রীত ওরফে জাসা, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত, পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যুক্ত। তারা বিদেশ থেকে অস্ত্রের অর্ডার দেয় এবং হাওয়ালা ও জাল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ পাকিস্তানে পাঠায়। ভারতে তাদের সহযোগী তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের খোঁজ চলছে।

মনদীপ সিং ওরফে মনপ্রীত, হোশিয়ারপুরের বাসিন্দা, যার দাদা ছিলেন পাঞ্জাব পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। খুন, গ্যাংস্টারিজম, NDPS-সহ ছয়টি মামলায় অভিযুক্ত মনদীপ ২০২৩ সালে জেলে যাওয়ার পর অস্ত্র পাচার শুরু করে। দলবিন্দর, ছোটবেলার বন্ধু, দুবাই থেকে ফিরে মনদীপের প্ররোচনায় অস্ত্র সরবরাহে যুক্ত হয়।

রোহন তোমার, গোগি গ্যাংয়ের ঘনিষ্ঠ, দিল্লি, হরিয়ানা, বিহার, উত্তরপ্রদেশে অস্ত্র সরবরাহ করে। ২০২৪ সালে STF তাকে ১৭টি পিস্তল ও ৭০০ কার্তুজসহ গ্রেপ্তার করে। জেল থেকে মুক্তির পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা জসপ্রীতের নির্দেশে আবার অস্ত্র সরবরাহ শুরু করে।

অজয় ওরফে মনু, রোহনের সহযোগী, সঞ্জীব জিভা ও অনিল বালিয়ানের ঘনিষ্ঠ। সে রোহনের সাথে চাঁদাবাজির কাজে যুক্ত ছিল এবং সোনু খাত্রির ঘনিষ্ঠ। সোনু খাত্রি ২০২১ সালে ভারত থেকে পালিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারি হয়েছে এবং ৪৫টিরও বেশি মামলা রয়েছে। সোনু এবং জসপ্রীত উভয়ই পাকিস্তান থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে, যা পরে ভারতে পাঠানো হয়।

এই গোটা চক্রটি ভারতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য এক বড় হুমকি। PX সিরিজের অস্ত্র, আন্তর্জাতিক অর্থ লেনদেন, এবং ড্রোন প্রযুক্তির অপব্যবহার—সব মিলিয়ে এটি আইএসআই-এর একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যা দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে বিপন্ন করছে।