দিল্লি বিস্ফোরণের পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উত্তপ্ত, যুদ্ধের ছায়া ঘনাচ্ছে, ‘আরেকটি সিঁদুর’ কি আসন্ন?
গত সোমবার সকালে দিল্লির তিনটি জনাকীর্ণ এলাকায় একযোগে ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক বিস্ফোরণ গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই বিস্ফোরণগুলিতে বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং অনেকেই গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এটি কোনও দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা। ঘটনাস্থলে উদ্ধার হওয়া প্রমাণ, বিস্ফোরণের ধরন এবং সময়ের সামঞ্জস্য—সবই এই তত্ত্বকে জোরালো করেছে।
এই ঘটনার পরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (CCS) একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠকে দিল্লি বিস্ফোরণের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং সীমান্ত সংক্রান্ত নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। বৈঠকের পর সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, এই হামলা ভারতের সার্বভৌমত্বের উপর সরাসরি আক্রমণ এবং এর জবাব শুধু কথায় নয়, কর্মের মাধ্যমেই দেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর অনেকের মনে পড়ে যায় অপারেশন সিন্দুরের কথা। পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ১৫ দিনের মাথায় ভারত ৭ই মে অপারেশন সিন্দুর চালু করেছিল, যেখানে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়। সেই সময় সরকার একটি নীতি ঘোষণা করেছিল—ভারতীয় ভূখণ্ডে যেকোনো সন্ত্রাসী হামলাকে যুদ্ধের পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। দিল্লি বিস্ফোরণের পর সেই নীতিই আবার কার্যকর হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) এবং গোয়েন্দা ব্যুরো (IB)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই হামলার পরিকল্পনা সীমান্তের ওপার থেকেই করা হয়েছে। হামলার ধরন, ব্যবহৃত বিস্ফোরক, এবং যোগাযোগের সূত্র থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে যে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি এই হামলার সঙ্গে যুক্ত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে, পশ্চিম সীমান্তে বিমান বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং নৌবাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনার পর একটি বিবৃতি জারি করে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে এবং ভারতকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। তবে দিল্লি সরকার এই প্রতিক্রিয়াকে “কপট” বলে অভিহিত করেছে। ভারতের কঠোর অবস্থান পাকিস্তানে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে অপারেশন সিন্দুরের পর থেকে প্রতিটি সন্ত্রাসী ঘটনাকে সীমান্ত সুরক্ষার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের হাতে বেশ কয়েকটি বিকল্প রয়েছে—সীমিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, সাইবার আক্রমণ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, অথবা কূটনৈতিক চাপ। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। জনমত এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব—উভয়ই দৃঢ় পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছে। দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সম্ভাব্য সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কগুলি সনাক্ত করার জন্য কাজ করছে, এবং সশস্ত্র বাহিনী উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় #ActOfWar এবং #NowOrNever ট্রেন্ড করছে। জনগণের ক্ষোভ স্পষ্ট—তারা বলছে, “আমরা বাগাড়ম্বর চাই না, আমরা আরও একটি সিঁদুর চাই।” অর্থাৎ, এমন একটি প্রতিক্রিয়া যা সন্ত্রাসবাদের প্রতিটি চিহ্ন মুছে ফেলবে এবং ভারতের নিরাপত্তাকে আরও দৃঢ় করবে।
এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশ অপেক্ষা করছে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য। প্রতিশোধ কি কেবল সীমিত থাকবে, নাকি এবার আরও বড় কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে—তা সময়ই বলবে। তবে একথা নিশ্চিত, দিল্লি বিস্ফোরণের পর ভারত আর চুপ করে বসে থাকবে না।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊