Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট একসঙ্গে, রাজনৈতিক বিতর্কে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট একসঙ্গে, রাজনৈতিক বিতর্কে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

Bangladesh election 2025, July Charter referendum, Mohammad Yunus speech, constitutional reform Bangladesh, caretaker government proposal, bicameral parliament Bangladesh, BNP reaction, Jamaat-e-Islami response, Salahuddin Ahmed statement, voter referendum Bangladesh, national election and reform, Bangladesh political news 2025

বাংলাদেশে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই সঙ্গে হবে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে একটি গণভোট, যা দেশের সংবিধান সংস্কারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনুস বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে এই যুগপৎ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “সংস্কারের লক্ষ্য কোনওভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না, বরং নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে।”

গণভোটে ভোটারদের সামনে একটি মাত্র প্রশ্ন থাকবে, যার মাধ্যমে তারা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে চারটি মূল সংস্কার প্রস্তাবের প্রতি মতামত জানাবেন। এই চারটি প্রস্তাব হলো:

  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠনের নতুন পদ্ধতি
  • দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, যেখানে উচ্চকক্ষে ১০০ জন সদস্য দলীয় ভোট অনুপাতে নির্বাচিত হবেন
  • নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দলের ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা
  • জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন

যদি গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে, যারা ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবেন। এরপর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উচ্চকক্ষ গঠন হবে, যার মেয়াদ থাকবে নিম্নকক্ষের মেয়াদ পর্যন্ত।

এই ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস তাঁর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ লঙ্ঘন করেছেন। তিনি বলেন, “সরকারের প্রকাশিত গেজেট ও স্বাক্ষরিত সনদের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।”

জামাত-ই-ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জনগণের অভিপ্রায় ও গণদাবিকে উপেক্ষা করে একই দিনে নির্বাচন ও গণভোটের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি।”

জুলাই সনদটি মূলত ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের পর ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন কর্তৃক প্রণীত হয়, যার লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা ও প্রশাসনিক সংস্কার। ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদকে বাস্তবায়নের জন্য ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ জারি করেছে।

তবে বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই আদেশের আইনি ভিত্তি স্পষ্ট নয় এবং গণভোটের আগে আরও আলোচনার প্রয়োজন। ইসলামি দলগুলোর জোট হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি জুলাই সনদকে আইনি স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তাহলে তারা নির্বাচন বয়কট করবে এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করবে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ও গণভোটের ফলাফলের উপর, যা একদিকে সংবিধান সংস্কারের পথ খুলে দিতে পারে, অন্যদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code