দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে আরও এক চিকিৎসক গ্রেপ্তার
দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর গোটা দেশজুড়ে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া এই বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন সাধারণ নাগরিক, আহত হয়েছেন বহু। ঘটনার পর থেকেই হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তরপ্রদেশে একযোগে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ATS ও NIA। এরই মাঝে কানপুরের গনেশ শঙ্কর বিদ্যার্থী মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ থেকে কার্ডিওলজি বিভাগের ছাত্র মহম্মদ আরিফকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ ATS।
আরিফের নাম উঠে আসে ড. শাহিন সাহিদ নামে এক মহিলা চিকিৎসকের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড বিশ্লেষণের সময়। শাহিনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে। তদন্তকারীদের দাবি, আরিফ ও শাহিনের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল, এবং এই যোগাযোগের ধরন সন্দেহজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে কানপুরের অশোকনগর এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে আরিফকে গ্রেফতার করা হয়। তার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
আরিফ যে হাসপাতালে পড়াশোনা করছিলেন, সেই GSVM মেডিকেল কলেজের সহকর্মী ও কর্মকর্তারা তার গ্রেফতারে হতবাক। তাঁদের দাবি, আরিফ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছাত্র। তার ব্যবহার বা গতিবিধিতে কখনও কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেননি তাঁরা। এমনকী তার পাশের ফ্ল্যাটে থাকা অন্য চিকিৎসকও জানান, শাহিন বা পারভেজকে কখনও সেখানে আসতে দেখেননি।
এই বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক, এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও ২৫০০ কেজি বিস্ফোরক ও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন মুজাম্মিল আহমেদ, মুজাম্মিল শাকিল ও আদিল মাজিদ রাথর—তিনজন চিকিৎসক, যাঁরা মূলত হোয়াইট কলার টেরর-এর মুখ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই বিস্ফোরণকাণ্ডে চিকিৎসকদের জড়িয়ে পড়া গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। তদন্তকারীরা এখন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সক্রিয় স্লিপার সেল খতিয়ে দেখছেন। আরিফ ও শাহিনের মতো চিকিৎসকদের জড়িত থাকার বিষয়টি সন্ত্রাসের নতুন রূপ—যেখানে সাদা পোশাকে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা সমাজের গভীরে ঢুকে পড়ছে।
এই মুহূর্তে দিল্লি, কানপুর, ফরিদাবাদ ও জম্মু-কাশ্মীর—সব জায়গায় তল্লাশি চলছে। তদন্তকারীরা বলছেন, এই বিস্ফোরণকাণ্ড শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত নেটওয়ার্কের অংশ, যার শিকড় ছড়িয়ে রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊