বাংলার নিজস্ব এভিএস: সাপের বিষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ
বাংলা অবশেষে পেতে চলেছে নিজস্ব অ্যান্টি-ভেনম সিরাম (AVS)। বহু প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের আমলে, কিন্তু বাস্তবায়নে সময় লেগেছে এক দশকেরও বেশি। এবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে প্রকল্পটি চূড়ান্ত রূপ নিতে চলেছে, যা সাপের কামড়ে আক্রান্তদের চিকিৎসায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে।
প্রকল্পের মূল ধাপগুলি নিম্নরূপ:
- বিষ সংগ্রহ: ইতিমধ্যেই একটি সংস্থাকে সাপের বিষ সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই বিষই হবে এভিএস তৈরির মূল উপাদান।
- চুক্তিপত্র ও ছাড়পত্র: দুটি সংস্থাকে এভিএস তৈরির চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ১০ নভেম্বরের মধ্যে চুক্তিপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এরপরই শুরু হবে উৎপাদন প্রক্রিয়া।
- উৎপাদনের বিজ্ঞানসম্মত ধাপ: সংগ্রহ করা বিষ ঘোড়ার শরীরে প্রবেশ করানো হবে। ঘোড়ার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হলে, সেই রক্ত থেকে নিয়ম মেনে তৈরি হবে অ্যান্টি-ভেনম সিরাম।
- দুই ফরম্যাটে প্রস্তুতি: এভিএস তৈরি হবে দুটি ফরম্যাটে—লিকুইড ও পাউডার। পাউডার ফরম্যাটের এভিএস দীর্ঘদিন ফ্রিজ ছাড়াও সংরক্ষণযোগ্য, যা প্রান্তিক ও দুর্গম এলাকায় চিকিৎসা সহজতর করবে।
- সামাজিক প্রভাব: বাংলার বহু গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার কমাতে এই উদ্যোগ কার্যকরী ভূমিকা নেবে। তামিলনাড়ু বা অন্যান্য রাজ্য থেকে আনা এভিএসের সঙ্গে সংগতির অভাবে অতীতে বহু জটিলতা দেখা গিয়েছে।
- স্বাস্থ্য দফতরের আশ্বাস: স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এই প্রকল্প সফল হলে বাংলার চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন আসবে। স্থানীয়ভাবে তৈরি এভিএস রোগীর শরীরের সঙ্গে বেশি সংগতিপূর্ণ হবে এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেবে।
এই উদ্যোগ শুধু চিকিৎসা নয়, বাংলার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও একটি মাইলফলক। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পকে ঘিরে গবেষণা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা—তিনটি ক্ষেত্রেই ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊