Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

WB Primary 32000 Case : কী হবে প্রাথমিক শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ ? জানুন মামলার গতি প্রকৃতি

WB Primary 32000 Case : কী হবে প্রাথমিক শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ ? জানুন মামলার গতি প্রকৃতি


Kolkata High Court questions legality of WB Primary 32000 teacher recruitment; future of thousands hangs in balance amid corruption claims.


পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাটি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক গভীর অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে। ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ৪২,৯৪৯ জন শিক্ষক নিয়োগ করে, যার মধ্যে প্রায় ৩২,০০০ জন অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘন, প্যানেল প্রকাশে অসঙ্গতি, অ্যাপটিটিউড টেস্টের অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে।

২০২৩ সালের মে মাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ ৩৬,০০০ চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন, যা পরে কমে ৩২,০০০ হয়। তবে ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রর ডিভিশন বেঞ্চে মামলার পুনরায় শুনানি শুরু হয়, যেখানে আদালত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে।

আদালতের মতে, অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের নিয়োগ যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে প্রশিক্ষিত ১২,০০০ জনের নিয়োগও একই ত্রুটির কারণে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। এর ফলে মোট ৪২,৯৪৯টি নিয়োগই বাতিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিচারপতিরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, আদালতের পক্ষে আলাদা করে বলা সম্ভব নয় কারা দুর্নীতিগ্রস্তভাবে চাকরি পেয়েছেন আর কারা পায়নি। এই অবস্থায় যদি চাকরি বাতিল হয়, তাহলে প্রায় ৩২,০০০ পরিবার বিপদের মুখে পড়বে। আবার যদি দুর্নীতি প্রমাণিত না হয়, তাহলে অযোগ্য প্রার্থীরা বছরের পর বছর চাকরি করে যাবেন—এটিও আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, সংরক্ষণ নীতির যথাযথ প্রয়োগ হয়নি। যেমন, SC প্রার্থীদের জেনারেল কোটা থেকে আবেদন করতে দেওয়া হয়নি। আদালত এই বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে যে, প্রার্থীর যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন গ্রহণ করা উচিত। এছাড়া, নিয়োগের কোনও অফিসিয়াল প্যানেল প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠলেও আদালত জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী প্যানেল প্রকাশের বাধ্যতামূলক উল্লেখ নেই।

অ্যাপটিটিউড টেস্ট সংক্রান্ত অভিযোগে দেখা গেছে, অনেক প্রার্থীর টেস্ট হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এই বিষয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে—কেউ বলছেন টেস্ট হয়েছে, কেউ বলছেন হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগে টাকা লেনদেনের প্রসঙ্গ উঠলেও আদালতে সুস্পষ্ট প্রমাণ হাজির হয়নি।

এই মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল—যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীকে কীভাবে আলাদা করা সম্ভব? যদি এই পৃথকীকরণ সম্ভব না হয়, তাহলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল হতে পারে। আবার এত বছরের চাকরি অভিজ্ঞতা থাকা শিক্ষকরা হঠাৎ চাকরি হারালে তার দায় কে নেবে—এই প্রশ্নও আদালতের সামনে এসেছে।

বর্তমানে আদালত মামলাকারী পক্ষকে স্পষ্ট আইনি যুক্তি উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে CBI ও ED-এর তদন্ত রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code