প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় নয়া মোড় ! দুর্নীতি নিয়ে জোরালো প্রমাণ চাইল হাই কোর্ট
২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে প্রায় ৪২,০০০ প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩২,০০০-এর বেশি নিয়োগকে ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাকারীদের দাবি, নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে—অ্যাপটিটিউড টেস্ট না নেওয়া, প্রশিক্ষণহীনদের নিয়োগ, সংরক্ষিত প্যানেল প্রকাশ না করা ইত্যাদি।
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ:
২ সেপ্টেম্বর, মামলার শুনানিতে বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে:
- “আদালতের পক্ষে কাদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়েছে আর কাদের হয়নি, কারা দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছে—এই পৃথককরণ কীভাবে সম্ভব?”
- “আপনারা দুর্নীতির অভিযোগ করছেন, কিন্তু তার সপক্ষে জোরালো প্রমাণ কোথায়?”
- “যদি অভিযোগ সত্যি হয়, তাহলে ৭-৮ বছর ধরে চাকরি করে যাওয়া প্রার্থীদের কীভাবে বাদ দেওয়া হবে?”
- “যদি ৩২,০০০ চাকরি বাতিল হয়, ক্ষতিগ্রস্তরা আদালতে এসে নিজেদের বক্তব্য রাখবেন। এর শেষ কোথায়?”
আইনজীবীর যুক্তি:
মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী সৌম্য মজুমদার জানান:
- নিয়োগের পর প্যানেল প্রকাশ করা হয়নি, যা নিয়মবহির্ভূত।
- জেলা ভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করা হলেও সংরক্ষিত প্রার্থীদের জন্য আলাদা প্যানেল প্রকাশ করা হয়নি।
- প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিজেই স্বীকার করেছে যে নিয়ম অনুযায়ী প্যানেল সংরক্ষণ করা হয়নি।
আদালতের নির্দেশ:
ডিভিশন বেঞ্চ মামলাকারীদের আইনজীবীদের কাছে আরও সুসংহত ও আইনি যুক্তি চেয়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানিতে আদালত চায়, মামলাকারীদের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হোক—কীভাবে আদালত আইনত চাকরি বাতিল করতে পারে এবং কোন ভিত্তিতে “ভালো” ও “খারাপ” নিয়োগ পৃথক করা সম্ভব।
বিশ্লেষণ:
এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আদালতের কাছে উপস্থাপিত প্রমাণ ও আইনি যুক্তির উপর। একদিকে রয়েছে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ, অন্যদিকে রয়েছে হাজার হাজার চাকরিপ্রাপ্ত প্রার্থীর ভবিষ্যৎ। আদালতের সিদ্ধান্ত শুধু প্রশাসনিক নয়, সামাজিক ও মানবিক দিক থেকেও গভীর প্রভাব ফেলবে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊