নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন- নতুন শাসনব্যবস্থার দাবিতে উত্তাল দেশ
নেপালে সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছে। সরকারি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং ক্ষমতাসীন নেতাদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ তরুণরা এখন দেশের শাসনব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছেন। দুই দিনের সহিংস আন্দোলনের পর কাঠমান্ডু জনশূন্য হয়ে পড়ে, সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর টহলে শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তরুণদের দাবি ও উদ্যোগ:
আন্দোলনকারীরা বলছেন, সহিংসতা এখন থেমে গেলেও তাদের দাবি অটল:
- দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর আইনি ব্যবস্থা
- তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ
- সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা
- মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
প্রতিবাদের পাশাপাশি তরুণরা রাস্তায় নেমে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিষ্কার করছেন। সংসদ ভবনের আশেপাশে ঝাড়ু হাতে যুবকদের দেখা গেছে, যা আন্দোলনের একটি গঠনমূলক দিক তুলে ধরে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও পদত্যাগ:
- আন্দোলনের চাপের মুখে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি ও অন্যান্য দুর্নীতিবাজ নেতা দেশত্যাগ করেছেন বলে দাবি উঠেছে।
- তিনটি রাজনৈতিক দলের সাংসদরা গণপদত্যাগ করেছেন:সিভিল ইমিউনিটি পার্টি: ৪ জন
- রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি: ২১ জন
- রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি: ১৪ জন
- সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
সহিংসতার চিত্র ও ক্ষয়ক্ষতি:
- রূপন্দেহি জেলার ভৈরহাওয়া ও বুটওয়ালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডের মালিকানাধীন সুপারমার্কেটে আগুন লাগানো হয়।
- হোটেল মোরায়া ক্যাসিনোতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে, যেখানে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা লুট হয়েছে।
- সুপারমার্কেটের ব্যবস্থাপক জানান, কিছু নৈরাজ্যবাদী উপাদান প্রায় ৫ কোটি টাকার মালামাল লুট করেছে।
নেপালের তরুণ প্রজন্ম এখন শুধু প্রতিবাদ নয়, বরং পুনর্গঠনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা এমন একটি নেপাল চায় যেখানে নেতৃত্ব হবে জবাবদিহিমূলক, প্রশাসন হবে স্বচ্ছ, এবং তরুণদের জন্য থাকবে কর্মসংস্থানের বাস্তব সুযোগ। এই আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তনের দাবি নয়, বরং একটি নতুন সামাজিক চেতনার সূচনা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊