মহালয়ার আগের দিন পুজো উদ্বোধন নিয়ে বিতর্ক, বিজেপিকে কড়া জবাব তৃণমূলের
মহালয়ার ঠিক আগের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন দুর্গাপুজো মণ্ডপে উপস্থিত হয়ে উৎসবের সূচনা ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। বিজেপির তরফে অভিযোগ—পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু ধর্মের রীতি ভেঙেছেন। পাল্টা জবাবে তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগকে ‘কুৎসা ও অপপ্রচার’ বলে অভিহিত করে চার দফা যুক্তি তুলে ধরে বিজেপিকে আক্রমণ করেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা: ‘‘আমি মাতৃমূর্তি উদ্বোধন করি না’’
শনিবার উত্তর কলকাতার হাতিবাগানে এক পুজো মণ্ডপে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,
“আগামীকাল মহালয়ার তর্পণ হবে। মহালয়ার আগে আমি মাতৃমূর্তি উদ্বোধন করি না। আমি কেবল মণ্ডপের উদ্বোধক হিসেবে এসেছি।”
তৃণমূলের চার দফা পাল্টা যুক্তি
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে চারটি যুক্তি তুলে ধরেন:
- পুজো নয়, উৎসবের সূচনা: মুখ্যমন্ত্রী পিতৃপক্ষে কোনও পুজো উদ্বোধন করছেন না। তিনি শুধুমাত্র মণ্ডপে গিয়ে উৎসবের সূচনা করছেন। ষষ্ঠীর আগে কেউই দেবীপূজা শুরু করেন না।
- উদ্বোধনের রেকর্ড: এ বছর মুখ্যমন্ত্রীকে তিন হাজারের বেশি পুজোর উদ্বোধন করতে হচ্ছে, যা সর্বকালীন রেকর্ড। কিছু পুজোয় তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে প্রদীপ জ্বালাচ্ছেন, বাকিগুলি ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করছেন।
- পঞ্জিকা ও ঐতিহ্য: একাধিক পঞ্জিকায় পুজো শুরুর দিন মহালয়ার আগেই নির্ধারিত। পুরুলিয়ার গড়পঞ্চকোট রাজপরিবারের পুজো ১৬ দিন আগেই শুরু হয়েছে। বনেদি বাড়িতেও মহালয়ার আগে দেবী বন্দনা শুরু হয়।
- মহিষাসুরমর্দিনী ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট: মহালয়ার দিন ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ প্রচারিত হয়, যা পিতৃপক্ষেই হয়। সেই সময় বহু মানুষ তর্পণে ব্যস্ত থাকেন। তাই দেবীপক্ষের অজুহাতে বিজেপির কুৎসা হিন্দুধর্মের অসম্মান।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন,
“পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু ধর্মের রীতি ভেঙেছেন।”
তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য—এই অভিযোগ তথ্যহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ধর্মীয় রীতিনীতির অপব্যাখ্যা। কুণাল ঘোষ বলেন,
“হিন্দুত্বের নাম করে ভুয়ো যুক্তি খাড়া করে মিথ্যাচার করছে বিজেপি। জনগণই তাদের জবাব দেবে।”
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊