বাংলাদেশের পণ্যের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করলেন ট্রাম্প, হতাশ না ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের উপর ২০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক সরকারি নির্দেশনামায় এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সেই নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প নিজে।
এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৭ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এই বাড়তি শুল্ক কার্যকর হবে।
এর আগে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল, প্রথম দফায় ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের উপর ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। যদিও সেটি পরে স্থগিত হয় এবং আংশিকভাবে হ্রাস করে তা ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর এবার শুল্ক হার ১৭ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক' আখ্যা দিয়ে বলেন, “আমাদের আলোচক দল অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। ৩৭ শতাংশ থেকে নামিয়ে ২০ শতাংশে নিয়ে আসা সহজ ছিল না। এই চুক্তি আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে এবং দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করেছে।”
বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “২০ শতাংশ শুল্কে আমরা এখনও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে আছি। আমেরিকায় আমাদের রপ্তানিতে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না। যদিও আমরা ১৫ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক আশা করছিলাম।”
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশ গড়ে ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে আমেরিকায় পণ্য রপ্তানি করে। নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এই হার বেড়ে মোট ৩৫ শতাংশ হবে।
এদিকে, ভারতের উপর প্রথমে ২৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল আমেরিকা। পরে ২৫ শতাংশ শুল্ক চূড়ান্ত করা হয়েছে। পাকিস্তানের উপর ধার্য করা হয়েছে ১৯ শতাংশ শুল্ক। এ ছাড়া, শ্রীলঙ্কা থেকে ২০ শতাংশ, আফগানিস্তান থেকে ১৫ শতাংশ, ব্রাজ়িল থেকে ১০ শতাংশ, মায়ানমার থেকে ৪০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক নেবে আমেরিকা। ২৫ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি ভারতের উপর জরিমানার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক (বিশেষত খনিজ তেল ও অস্ত্র আমদানি) বজায় থাকলে ভবিষ্যতে ভারতের উপর আরও বাড়তি শুল্ক ও জরিমানার ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্যে আমেরিকার এই নতুন শুল্ক নীতির ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য রপ্তানি প্রতিযোগিতা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে এ যাত্রায় বড় ধরনের চাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊