Fact Check : 'নতুন ফেসবুক নিয়ম' আপনিও পোস্ট করেছেন? তাহলে জেনেনিন
'নতুন ফেসবুক নিয়ম' নিয়ে একটি লেখা, যেখানে শেষে উল্লেখ রয়েছে 'আমি এই মর্মে ঘোষণা করছি যে আমি ফেসবুক বা মেটাকে আমার কোনো ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছি না।' এই ধরণের পোস্ট ফেসবুকে রীতিমত ভাইরাল। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বার্তাটি সম্পূর্ণ অসত্য এবং একটি পুরোনো গুজব যা বিভিন্ন সময়ে নানা রূপে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এই বার্তাটির কোনো সত্যতা নেই। এই ধরনের দাবি আগেও ২০১২, ২০১৯, ২০২০ সালে গুজব হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
কেন এই বার্তাটি মিথ্যা?
১. "নতুন ফেসবুক নিয়ম" এবং "মেটা": বার্তাটিতে বলা হচ্ছে "আগামীকাল থেকে নতুন ফেসবুক নিয়ম (অর্থাৎ নতুন নাম, মেটা) চালু হচ্ছে, যার অধীনে কোম্পানি আপনার ছবিগুলো ব্যবহার করতে পারবে।" এই তথ্যটি ভুল। মেটা (Meta) ফেসবুকের নতুন মূল কোম্পানির নাম, যা ২০২১ সালের অক্টোবরে ঘোষণা করা হয়েছিল। এই নাম পরিবর্তনের সাথে ডেটা ব্যবহারের নিয়মের কোনো মৌলিক পরিবর্তন হয়নি। ফেসবুক বা মেটার ডেটা নীতি ইতিমধ্যেই বহু বছর ধরে কার্যকর আছে এবং এটি হঠাৎ করে একদিনে বদলায় না।
২. ব্যক্তিগত পোস্টের কার্যকারিতা: আপনার প্রোফাইলে এমন একটি ঘোষণা পোস্ট করার মাধ্যমে ফেসবুকের ডেটা ব্যবহারের নীতি বা শর্তাবলী (Terms of Service) পরিবর্তন করা যায় না। আপনি যখন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন, তখন তাদের শর্তাবলীতে সম্মতি দেন। এই শর্তাবলী একটি আইনি চুক্তি, যা কোনো ব্যক্তিগত পোস্টের মাধ্যমে বাতিল বা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
৩. "সিস্টেমকে বাইপাস" করার দাবি: বার্তাটিতে বলা হয়েছে "এটি সিস্টেমকে বাইপাস করতে সাহায্য করবে।" এটি প্রযুক্তিগতভাবে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ফেসবুকের ডেটা পরিচালনার সিস্টেম এত সহজে বাইপাস করা সম্ভব নয়।
৪. "৬০ মিনিটস শো অনুযায়ী": এই বার্তাটিতে প্রায়শই "৬০ মিনিটস শো" বা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সংবাদ মাধ্যমের নাম উল্লেখ করা হয়, যাতে এটিকে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। কিন্তু এই দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোনো প্রতিষ্ঠিত সংবাদ সংস্থা এমন ভিত্তিহীন পরামর্শ দেয় না।
৫. "গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য আইন অনুযায়ী শাস্তি": এই ধরনের হুমকি দিয়ে মানুষকে ভয় দেখানো হয়, যাতে তারা বার্তাটি শেয়ার করে। এটি শুধুমাত্র একটি কৌশল।
৬. "ফেসবুক (মেটা) এখন একটি পাবলিক প্রতিষ্ঠান": ফেসবুক (এখন মেটা প্ল্যাটফর্মস) বহু বছর ধরেই একটি পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি, অর্থাৎ এর শেয়ার স্টক এক্সচেঞ্জে কেনাবেচা হয়। এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়, এবং পাবলিক প্রতিষ্ঠান হওয়ার সঙ্গে ডেটা ব্যবহারের নিয়মের এই ধরনের পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই।
৭. সময়সীমা এবং কপি-পেস্ট নির্দেশ: বার্তাটিতে একটি কাল্পনিক "সময়সীমা" দেওয়া হয় এবং কপি-পেস্ট করার জন্য উৎসাহিত করা হয়, যাতে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি ভাইরাল হওয়ার একটি পরিচিত কৌশল।
আপনার তথ্য কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন?
আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে আপনার উচিত:
- ফেসবুকের প্রাইভেসি সেটিংস (Privacy Settings) নিয়মিত পর্যালোচনা করা।
- কোনো লিঙ্কে ক্লিক করার আগে বা কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে সেটির সত্যতা যাচাই করা।
- অপরিচিত বা সন্দেহজনক অ্যাপকে আপনার ফেসবুক ডেটা অ্যাক্সেস করার অনুমতি না দেওয়া।
এই বার্তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিজেদের প্রাইভেসি সেটিংস পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে হালনাগাদ করা উচিত। আরও তথ্যের জন্য ফেসবুকের অফিসিয়াল ডেটা পলিসি পৃষ্ঠা দেখতে পারেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে, এটি একটি ভুয়া বার্তা। এই ধরনের বার্তা শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন এবং অন্যদেরও সতর্ক করুন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊