গাজায় মানবিক সংকট । ত্রাণ শিবিরগুলিতে মৃত্যুর ফাঁদ ও শিশু মৃত্যু বৃদ্ধি
![]() |
Palestinians gather to receive the humanitarian aid supplies airdropped into Khan Younis, Gaza, on 28 May. Photograph: Ashraf Amra/Anadolu/Getty Images |
গাজা: যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সংকট (Gaza humanitarian crisis) চরম আকার ধারণ করেছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে (aid camps) খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। গত জুন মাস থেকে গাজার ত্রাণ শিবিরগুলি গড়ে মাত্র ১১ মিনিট খোলা থাকছে। এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে, যার ফলে পদপিষ্টের (stampede) মতো ঘটনা ঘটছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের (Israeli forces) গুলি। সব মিলিয়ে গাজার ত্রাণ শিবিরগুলি এখন এক মৃত্যুফাঁদে (death trap) পরিণত হয়েছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জেরে অনাহারে (starvation) ও অপুষ্টিতে (malnutrition) শিশুমৃত্যু (child mortality) লাগাতার বেড়ে চলেছে। এক সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত তিন দিনে গাজায় অনাহারে ২১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গাজার আল-শিফা মেডিক্যাল সেন্টারের ডিরেক্টর মহম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, হাসপাতালগুলিতে প্রতিদিন অপুষ্টি এবং অনাহারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
জাতিসংঘের (United Nations) রিপোর্ট বলছে, গত মে মাস থেকে এখনও পর্যন্ত গাজার ত্রাণ শিবিরগুলিতে খাবার আনতে গিয়ে হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির খাদ্যসংকট (food shortage) চরম সীমায় পৌঁছেছে। ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও জীবনধারণের ন্যূনতম রসদ পাচ্ছেন না। একমাত্র উপায় এই ত্রাণ শিবিরগুলি, কিন্তু সেখানেও ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষুধার্ত মানুষের উপর গুলি ছুড়ছে ইসরায়েলের সেনা।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই পরিস্থিতিকে 'ভয়াবহ' বলে উল্লেখ করেছেন। মঙ্গলবার গাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে গাজা মৃত্যু এবং ধ্বংসের এমন এক স্তরে রয়েছে, যার তুলনা নেই।”
অভিযোগ উঠেছে, দিনের পর দিন ত্রাণ শিবিরে গিয়েও মানুষ খাবার পাচ্ছেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আগের দিন থেকে সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন খাবারের জন্য, তারপরও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। সামান্য খাবারের জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে ত্রাণশিবিরে ভিড় করছেন গাজাবাসী।
এদিকে, গাজায় ত্রাণ বিতরণ করছে ইসরায়েল-সমর্থিত সংগঠন গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (Gaza Humanitarian Foundation - GHF)। তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই সংস্থা চারটি নির্দিষ্ট জায়গায় ত্রাণ দিচ্ছে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের (Palestinians) প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই স্থানগুলি থেকে ত্রাণ শিবিরের দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার। সেখান থেকেই বাসিন্দাদের ত্রাণ নিতে আসতে হচ্ছে, এবং এসেও অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। গত মার্চ মাস থেকে গাজা অবরুদ্ধ (blockade) করে রেখেছে ইসরায়েলের সেনা। ফলে অন্য কোনো বেসরকারি ত্রাণ (private aid) এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি প্রবল চাপের মুখে অবরোধ কিছুটা শিথিল করা হলেও তাতে খাদ্য সংকট কাটছে না।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊