বাংলাদেশের বিমান দুর্ঘটনায় ভারতের মানবিক সহায়তা
ঢাকা/নয়াদিল্লি, ২৩শে জুলাই, ২০২৫: সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে ভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক সংখ্যা নিয়ে যেমন ধোঁয়াশা রয়েছে, তেমনই ভারতের এই সহায়তার পরিপ্রেক্ষিতে লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাঁর কড়া মন্তব্য করেছেন, যা সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত সোমবার ঢাকার উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে। প্রাথমিক খবরে ২৮ জন আহতকে হাসপাতালে ভর্তির কথা জানানো হলেও, পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস অন্তত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে এবং শতাধিক মানুষের আহত হওয়ার কথা জানায়। তবে, ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে এখনো কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে।
লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাঁর মন্তব্যে এই অনিশ্চয়তার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন: "কেউ বলছে ৩১ জন, কেউ বলছে ১০০ জন, কেউ বলছে ২০০ জন শিশু মারা গিয়েছে বাংলাদেশের বিমান দুর্ঘটনায়। আসল সংখ্যাটা আমরা সাধারণ জনগণ, জানিনা, কোনওদিন জানতে পারবো কি না।"
এই কঠিন সময়ে ভারত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। তসলিমা নাসরিন তাঁর পোস্টে ভারতের সহায়তার বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন: "ভারত এখন বার্ন স্পেশালিস্ট ডাক্তার আর নার্সের মেডিক্যাল টিম পাঠাচ্ছে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা করার জন্য। উন্নত চিকিৎসার সরঞ্জামও পাঠাচ্ছে। খুব ক্রিটিক্যাল অবস্থা যাদের, উন্নততর চিকিৎসার জন্য তাদের ভারতে নেবে ওরা।"
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এক্স (পূর্বের টুইটার) বার্তায় বলেছেন:
“ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত, এদের মধ্যে অনেকেই তরুণ শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। ভারত, বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে সম্ভাব্য সবরকমের সহায়তা করতে প্রস্তুত।”
ভারতের এই দ্রুত মানবিক সহায়তা দুই দেশের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি নিদর্শন। বিশেষ করে, গুরুতর দগ্ধ রোগীদের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসা এবং উন্নত সরঞ্জাম পাঠানো, যা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি, তা প্রশংসনীয়।
ভারতের এই সহায়তার পরিপ্রেক্ষিতে তসলিমা নাসরিন কিছু ভারতবিদ্বেষী গোষ্ঠীর সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন: "বাংলাদেশের ভারতবিদ্বেষীরা কী করবে এ-সময়? ভারতের মেডিক্যাল টিমের বিরুদ্ধে স্লোগান দেবে? ভারতের পতাকা মাটিতে ফেলে পায়ে মাড়াবে?"
তাঁর মন্তব্যের শেষ অংশে তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট টেনে এনেছেন, যেখানে ভারত বাংলাদেশের মিত্রশক্তি হিসেবে কাজ করেছিল। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন: "মুক্তিযুদ্ধের মিত্রশক্তিকে যারা শত্রু ভাবে, তারা দেশপ্রেমিক নয়।"
বাংলাদেশের বিমান দুর্ঘটনা একটি মর্মান্তিক ঘটনা, যা বহু পরিবারকে শোকাহত করেছে। এই সময়ে ভারতের মানবিক সহায়তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। তসলিমা নাসরিনের মন্তব্য এই সহায়তার প্রেক্ষাপটে কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কের দিকে ইঙ্গিত করে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকেও স্মরণ করিয়ে দেয়। এই মানবিক বিপর্যয়ে আহতদের দ্রুত আরোগ্য এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতিই এখন সবচেয়ে জরুরি।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊