১০০০ এর বেশি সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ বাতিল- ইউজিসি নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ
নয়াদিল্লি, ১৫ জুলাই: পাঞ্জাবে ১০০০-এরও বেশি সহকারী অধ্যাপক (Assistant Professor) এবং লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC - University Grants Commission)-এর নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগের ভিত্তিতে এই রায় দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের ফলে পাঞ্জাবের উচ্চশিক্ষা (higher education) খাতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে যে, পাঞ্জাব সরকার কর্তৃক পরিচালিত পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি (Panjab University) এবং গুরু নানক দেব ইউনিভার্সিটি (Guru Nanak Dev University)-তে ১,০৯১টি সহকারী অধ্যাপক এবং ৬৭টি লাইব্রেরিয়ান পদের জন্য এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ইউজিসি-এর নির্দেশিকা (UGC norms) অনুসরণ করেনি, যা দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বাধ্যতামূলক। আদালত মন্তব্য করেছে যে, আইন যখন কোনো কাজকে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে করার নির্দেশ দেয়, তখন তা সেই পদ্ধতিতেই করা উচিত। ইউজিসি-এর নিয়মাবলী মানা না হলে শিক্ষার মান (quality of education) বজায় রাখা কঠিন হবে।
বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া (Justice Sudhanshu Dhulia) এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের (Justice K Vinod Chandran) সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ বলেছে, "বর্তমান মামলায় একাধিক ত্রুটি রয়েছে। ইউজিসি বিধিমালায় নির্ধারিত কঠোর মানদণ্ডকে একটি একক, বহু-নির্বাচনী প্রশ্নভিত্তিক লিখিত পরীক্ষা দিয়ে বাতিল করা এবং মৌখিক পরীক্ষা (viva-voce) সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া—এ সবই নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বেচ্ছাচারী প্রকৃতিকে প্রমাণ করে, যা সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদের (Article 14 of the Constitution) অধীনে যুক্তিসঙ্গততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে না।"
আদালত আরও বলেছে যে, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের একক বিচারক সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে বাতিল করেছিলেন এবং হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করে ভুল করেছে। সুপ্রিম কোর্ট সিনিয়র অ্যাডভোকেট রাজু রামচন্দ্রন (Raju Ramchandran) এবং নিধেশ গুপ্তার (Nidhesh Gupta) আবেদন গ্রহণ করেছে, যারা অভিযোগ করেছিলেন যে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি অবৈধ এবং বাতিল করা উচিত।
আদালত উল্লেখ করেছে যে, নিয়োগ প্রক্রিয়া কোনো কারণ ছাড়াই পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে নির্বাচন শুধুমাত্র লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে হবে। আদালত বলেছে, "রাষ্ট্র তার নীতি পরিবর্তন করার অধিকারী, তবুও বৈধ কারণ ছাড়া হঠাৎ পরিবর্তন সবসময় সন্দেহের চোখে দেখা হবে। এমনকি যেখানে কোনো নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য কোনো বিধিবদ্ধ বিধান নেই, সেখানেও নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে দীর্ঘদিনের প্রচলিত প্রথা মেনে চলতে হবে।"
এই নিয়োগগুলি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছিল এবং একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন ছিল। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বিতর্কের অবসান ঘটাল। এই রায়ের ফলে যারা সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। পাঞ্জাব সরকার এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে এখন নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, যা ইউজিসি-এর সমস্ত নিয়মাবলী মেনে পরিচালিত হবে। এই ঘটনা দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির জন্যও একটি সতর্কবার্তা, যেখানে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা ও নিয়মাবলী অনুসরণের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊