অন্ধকারে ডুবে থাকা গ্রামে স্বাধীনতার পর প্রথমবার বিদ্যুৎ
সমির হোসেন, দিনহাটা:
৭৬ বছর পর বিদ্যুৎ আসছে খারিজা হরিদাস ও কোনা মুক্তা গ্রামে, সীমান্তে জ্বলবে আশার আলো। স্বাধীনতার ৭৬ বছর পেরিয়ে এবার প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের আলো পৌঁছাতে চলেছে কোচবিহার জেলার দিনহাটা-১ ব্লকের সীমান্তবর্তী দুটি গ্রাম-খারিজা হরিদাস খামার ও কোনা মুক্তায়। বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গ্রামে ঢুকছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, টানা হচ্ছে তার। স্বপ্ন এখন বাস্তবের দোরগোড়ায়। এই দুটি গ্রামের বেশিরভাগ অংশ কাঁটাতারের ওপারে।
সীমান্ত সংলগ্ন এই এলাকার বাসিন্দারা এতদিন লণ্ঠন ও সৌরবাতির আলোতেই রাত কাটাতেন। বিদ্যুৎ না থাকায় জলসেচ হত ডিজেল চালিত মেশিনে, আর গরমে ফ্যান না চালিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে কষ্টেই দিন কেটেছে বহু পরিবারে। গ্রামের বাসিন্দা আনু মিঞা বলেন, "এতদিন ডিজেল মেশিনে সেচ দিতে হত। বিদ্যুৎ এলে অনেক টাকা বাঁচবে।" আরেক বাসিন্দা হাসানুর হকের কথায়, "বাচ্চারা গরমে ঘুমোতে পারত না। এবার অন্তত একটা ফ্যান চালাতে পারবো।" গত পাঁচ বছর ধরে এই দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন আমিনুর খন্দকার। তিনি বলেন, "এটা শুধু একটা পরিষেবা নয়, আমাদের লড়াইয়ের স্বীকৃতি। বিদ্যুৎ এলে বুঝবো, আমরা সত্যিই ভারতীয় নাগরিক।" গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও অঞ্চল সভাপতি আশাদুল হক জানান, "বিএসএফ, বিডিও ও বিদ্যুৎ অফিসের সাথে বহু দফা আলোচনা হয়েছে। সেই প্রচেষ্টাতেই কাজ শুরু হয়েছে।" ওকরাবাড়ি বিদ্যুৎ অফিসের স্টেশন ম্যানেজার গুরু গোপাল বানার বলেন, "কাঁটাতারের ওপারে ৫টি খুঁটি বসানো হয়েছে, নদীর ওপর দিয়েও লাইন গেছে। মিটার ঘর তৈরি হলেই সংযোগ চালু করা হবে।" এ যেন শুধুই বিদ্যুৎ নয়-আলো পৌছানোর সাথে সাথে সীমান্তে ঘর বাঁধা মানুষের মনে জেগেছে ভরসা, আশ্বাস আর দীর্ঘদিনের অবহেলিত জীবনে এক নতুন সূর্যোদয়।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊