বালুরঘাট সহ অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় দুর্ভিক্ষে নেতাজী এসেছিলেন
দক্ষিণ দিনাজপুর,২৩ জানুয়ারি:
২৩ শে জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন ঠিক তারই আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সদর শহর বালুরঘাটে মানুষেরা নেতাজিকে নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করলেন। এই বিষয় নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হলেন, বিশিষ্ট শিক্ষক ইতিহাসবিদ ও গবেষক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতি তথা বিশিষ্ট আইনজীবী। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে একটি বিরাট অংশ জুড়ে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নাম জড়িয়ে আছে। ১৯২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসের শেষে তৎকালীন উত্তরবঙ্গের চারটি জেলায় বিধ্বংসী বন্যা হয়। আত্রেয়ী নদী বিধৌত এলাকা জুড়ে বন্যায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৫ লক্ষেরও বেশী মানুষ এই বিধ্বংসী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্থদের একটা বিরাট অংশই ছিল মুসলমান, তৎকালীন অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট মহাকুমার পাশাপাশি রাজশাহী জেলার নাটোর ও নওগাঁ মহকুমা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই সময় বালুরঘাট মহাকুমার ধামোইরহাট ও পত্নীতলা অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়।
এই দুর্ভিক্ষ দেখতে এসেছিলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে তার সহযোগী ডা: যতীন্দ্র নাথ সেনগুপ্ত। সেই সময় বেঙ্গল রিলিফ কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটির মাধ্যমে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু দেশবাসীকে ত্রাণের সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। প্রায় চার লক্ষ টাকা ত্রাণ হিসেবে উঠেছিল। ১৯২৮ সালের ২৬শে মে নেতাজী নর্থ বেঙ্গল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে হিলিতে এসেছিলেন। হিলি স্টেশনে নেতাজীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এই হিলি স্টেশন বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্যে পড়েছে। হিলির তৎকালীন জমিদার কুমুদনাথ রায়ের সঙ্গে নেতাজীর ঘনিষ্ঠ যোগসূত্রের কথা বিভিন্ন নথি থেকে জানাযায়। হিলির সারদা ভবন পাঠাগার পরিদর্শন করে ভিডিটর বুকে সুভাষচন্দ্র বসু মন্তব্য লেখেন। কংগ্রেস নেতা প্রতাপ চন্দ্র মজুমদার তার সঙ্গী ছিলেন, তাছাড়াও কংগ্রেস নেতা নিশীথ কুন্ডুর সাথেও সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স এর শাখা হিলির পাশাপাশি অবিভক্ত দিনাজপুরে ছিল।
বালুরঘাটের বরেণ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী সরোজ রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে নেতাজী রাত কাটিয়েছেন, সেই সময় তিনি বালুরঘাটের বর্তমান কংগ্রেস পাড়ায় কংগ্রেস ভবনের দ্বারোদঘাটন করেন। সেই কংগ্রেস ভবন আজ আর নেই আত্রেয়ী নদীতে বন্যায় তলিয়ে গেছে। সেইসময় বালুরঘাটের দুর্ভিক্ষের খবর বেশ কয়েকটি পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের প্রবাসী পত্রিকাতে লিখেছিল দুর্ভিক্ষের অবস্থা এখনো পূর্ববৎ রহিয়াছে। এই দুর্ভিক্ষে অন্নাভাবে পুত্র-কন্যা বিক্রয়ের সংবাদও পাওয়া যায়। ভারতমাতার বীরসন্তান নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি আপামর দেশবাসী এখনও পর্যন্ত সঠিক মর্যাদা স্থাপন করতে পারিনি।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊