কনকনে শীতের পারদ নামতেই নলেন গুড়ে মজেছে আপামর বাঙালি
দক্ষিণ দিনাজপুর, ১৭ ডিসেম্বর:
বাঙালি বড্ড বেশি ভোজনরসিক। জামাইষষ্ঠীর পর আষাঢ়ের বৃষ্টি শুরু হতেই বাঙালি ছোটে মাছের বাজারে ইলিশের খোঁজে। শারদ উৎসবের শুরু হতেই হেঁসেলে গিন্নি খোঁজেন শীতের সব্জি। ঠিক সেই সময় বিজয়ার নাড়ু নিয়ে ব্যস্ত থাকেন ঠাকুমা দিদিমারা। আর এরপর শারদ উৎসব পেরোলেই শীতের আমেজ। নতুন ধান ঘরে ওঠার পালা। এবার বাঙালির সন্ধানে আসে খেজুরের রস ও খেজুর গুড়। নভেম্বর মাসের মধ্যে হালকা শীতের আমেজ অনুভূত হয়। ধীরে ধীরে শীত জাঁকিয়ে পড়তে থাকে। মাঝে মাঝে আকাশ মেঘলা থাকায় শীতের কনকনে ভাব হাড়ে হাড়ে টের পায় মানুষজন। আর এরপর জানুয়ারি মাসে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা সেইসময় আপামর বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠে পুলির অনুষ্ঠান। সেই পিঠে-পুলি তৈরিতে চাই নলেন গুড়। কথা বলছি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর ব্লকের বরভিটা গ্রামের সুরেশ সরকার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে সেই রস জাল দিয়ে নলেন গুড় তৈরি করেন।
প্রতি বছরই খেজুর গাছ থেকে রস বের করে নলেন গুড় তৈরি করেন বছর ৫০-এর সুরেশ বাবু। তিনি প্রায় ৮ বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন।সুরেশবাবু জানান, প্রতি বছর ১৪ থেকে ১৫ টি খেজুর গাছ কিনে নিতে হয়। সেই গাছ থেকে রস নেবার পর কমপক্ষে সাতদিন বিশ্রাম দিতে হয়, একে বলে শুকি। এই শুকি না দিলে খেজুর রসের স্বাদ থাকবে না ফলে নলেন গুড়ের স্বাদও কমে যাবে। সুরেশবাবুর এই গুড় তৈরির কাজে হাত লাগান তাঁর দুই ছেলে উত্তম ও শুভ।এই নলেন গুড়কে বাজারজাত করার জন্য তিনি সরাইহাট, হরিরামপুর হাট, পাতিরাজ হাট সহ এলাকার বিভিন্ন হাটে এই নলেন গুড় ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশ ছোঁয়া কিন্তু গুড়ের দাম সেভাবে পাওয়া যায় না। তবে গত দু'বছর আগে চলতে থাকা করোনা মহামারীর জেরে ব্যবসায় অনেকটা মন্দা থাকার ফলে লক্ষীর ভাঁড়ে টান পড়েছিল ব্যবসায়ীদের।
তবে বর্তমানে পরিস্থিতি অনেক স্বাভাবিক আর তাই এই শীতের সময় ফের নলেন গুড়ের ব্যবসায় লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। জেলার এলাকাবাসী বিমান হালদার, জানান সুরেশবাবুর তৈরি নলেন গুড়ের একটা নাম আছে এলাকায়। যার জন্য আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন চলে আসেন সুরেশবাবুর বাড়ি গুড় কিনতে। তবে গত দু’দিন ধরে চলতে থাকা উত্তুরে ঠান্ডা কনকনে হাওয়া উত্তরবঙ্গ জুড়ে জাঁকিয়ে ঠান্ডার থাবা ফেলেছে তার রেশ পাওয়া যাচ্ছে হাড়ে হাড়ে। আমরা তার সাথে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসীরা ঐ হাড় হিম করা ঠান্ডায় কাঁপছি। কনকনে ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে জবুথবু হয়ে লেপের তলায় আশ্রয় নিয়েছে আবালবৃদ্ধবনিতা তা বলাই বাহুল্য।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊