কালী পুজোর মধ্যে দিয়ে মহালয়ার ভোরে হয় দেবী দুর্গার চক্ষুদান, জানুন রাজবাড়ির দুর্গা পূজার নীতি-নিয়ম

jalpaiguri



তিস্তার চড়ে কাশের বন আভাস দেয় পুজো আসছে! হাতে আর মাত্র ক'টা দিন বাকি উমার আগমনের পুজো মন্ডপ গুলিতে চলছে জোর প্রস্তুরি। জলপাইগুড়ির পুজো গুলোর মধ্যে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী পুজো জলপাইগুড়ির রাজবাড়ীর পুজো। সময় বদলালেও এখনও ইতিহাস এবং নীতি-নিয়ম বদলে যায়নি রাজবাড়ির। কেন এই পুজো আর পাঁচটা দুর্গাপুজো থেকে আলাদা? কী নিয়মই বা রয়েছে পুজোর? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

এ বছর ৫১৫ তম বর্ষে পদার্পণ করছে জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির এই ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক পুজো। প্রত্যেক বছর জলপাইগুড়িবাসী মুখিয়ে থাকে রাজবাড়ী পুজোর সাক্ষী হতে। পূজোর প্রস্তুতি এখন চলছে জোর কদমে। দেবী মূর্তি বানানোর সম্পন্ন হয়েছে। রং এবং চক্ষুদান সবকিছুই হবে সময় মত। এদিকে রাজবাড়ীর পূজো প্রস্তুতি কেমন চলছে তা দেখতে এখন থেকেই সাধারণ মানুষের আনাগোনা চোখে পড়ছে রাজবাড়ী এলাকা জুড়ে। এখানকার দেবী মূর্তি থেকে শুরু করে পূজোর আচার অনুষ্ঠান এমনকি ভোগেও রয়েছে অভিনব বিশেষত্বের ছোঁয়া। মায়ের মূর্তির রং হয় তপ্ত কাঞ্চনবর্ণের। মায়ের পায়ের সামনে সিংহের সঙ্গে থাকে বাঘ।

কার্তিক এবং গণেশের পোশাক আসে সুদূর আসাম থেকে এবং দুর্গা এবং সরস্বতী লক্ষ্মীর বেনারসি শাড়ি আসে কলকাতা থেকে। উমার মাথার উপরে যে চাঁদোয়া থাকে, সেসব যাবতীয় সরঞ্জাম আসে ওপার বাংলা থেকে। এমন রীতি নিয়ম মেনে এখনও পুজো হয়ে চলছে জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে। এবং ভোগ হিসেবে মা'কে দেওয়া হয় নানান রকমের আমিষ পদ। চালের গুঁড়ো দিয়ে প্রতিকী বানিয়ে বলি দেওয়া হয়। বংশপরম্পরায় প্রত্যেক বছর এমনই ঐতিহ্যবাহী নিয়ম সুষ্ঠুভাবে মেনে মা দুর্গা পুজিতা হন জলপাইগুড়ির রাজবাড়িতে।

মহালয়া রাতেই কালী পুজোর মধ্যে দিয়ে ভোরে হয় দেবী দুর্গার চক্ষুদান। তাই দুর্গাপুজোর প্রাক মুহূর্তে জোর কদমে চলছে পুজো প্রস্তুতি জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে। সারিয়ে তোলা হচ্ছে রাজবাড়িকে পুজোর চারটে দিনের জন্য শহর জলপাইগুড়ির মানুষ এই পুজোর জন্য অপেক্ষায় থাকে সারাটা বছর। এই রাজবাড়ির পুজোয় দশমীর দিন পালনও শহরবাসীর কাছে নস্টালজিয়া। কোনও মিউজিক সিস্টেমের গানে নয় মা'কে বিদায় জানানো হয় ঢাকের তালে। চোখের কোণে জল আর সেই এক বছরের দিন গণনা! সব মিলে রাজবাড়ীর দুর্গাপুজো জলপাইগুড়ির বাসীর কাছে একটি আবেগ।