কচুরিপানার আঁশ দিয়ে ১সেমি দুর্গা মূর্তি বানিয়ে তাক লাগালেন শিল্পী দেবপ্রসাদ মালাকার
কচুরিপানার আঁশ দিয়ে ১ সেন্টিমিটারের দুর্গা মূর্তি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিল ব্যারাকপুরের বাসিন্দা শিল্পী দেবপ্রসাদ মালাকার।
কোনো মাটি কিংবা খর বিচুলি নয়। কচুরিপানার পাতা শুকিয়ে তা থেকে আঁশ বের করে সেই দিয়ে দশভূজার মূর্তি তৈরি করে অবাক করলো দেবপ্রসাদ। খুব ছোট্ট থেকেই একটা শিল্পীভাব তার মধ্যে ফুটে উঠেছে নানান কাজের মধ্য দিয়েই। আঁকার ক্ষমতা যেন ঈশ্বরপ্রদত্ত । সাথে মাটি এবং অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে সে কিছু না কিছু বানিয়েই চলেছে আপন খেয়ালে।
ছোট থেকে মাটি নিয়ে চর্চা করার শখ ছিল। সখ ছিল মেকাপের মাধ্যমে একজনকে অভিনব সাজে সাজিয়ে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে ও। তবে পরিবারের চাপে সে সব নিয়ে আর চর্চা করার সুযোগ না হলেও পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজ থেকে অঙ্কন বিষয়ে স্নাতক কোর্স সম্পন্ন করার পর থেকে শুরু হয় প্রত্যক্ষভাবে এই নিয়ে চর্চা। নিজের অঙ্কন প্রশিক্ষণ চালানোর পাশাপাশি এনিমেশনের ক্লাসও করান তিনি। ২০০০ সাল থেকে প্রথম ব্যারাকপুর পৌরসভার অন্তর্গত পলতা শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা শিল্পী দেবপ্রসাদ মজুমদার শুরু করেন ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম দুর্গা মূর্তি বানানোর কাজ। যার ঝুলিতে রয়েছে দেশলাই কাঠি , তুলো, পাট ,রাবার ,নারকেল পাতা, বাদামের খোসা ,চক, টুথপিক, টিস্যু পেপার থেকে শুরু করে ধানের খোসার মতো অতি সাধারণ উপকরণ দিয়ে মিনিয়েচার দুর্গার মূর্তি গড়ার কাজ । সর্বোচ্চ দুই মিলিমিটার উচ্চতা বিশিষ্ট দুর্গার মূর্তি করে গোটা দেশের মানুষের নজর কেড়েছিলেন শিল্পী দেবপ্রসাদ। তার এই কর্মকান্ডের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। প্রতিবছর সকলকে তাক লাগিয়ে এমনই অবিশ্বাস্য উপকরণ ব্যবহারে মিনিয়েচার দুর্গার মূর্তি বানিয়ে থাকেন তিনি। আর তাই পুজোর প্রাক্কালে সকলের আগ্রহ থাকে তার সৃষ্ট এবছরের দুর্গার মূর্তি দেখবার জন্যে। এবছর কচুরিপানা শুকিয়ে তা থেকে আঁশ বের করে মাত্র এক সেন্টিমিটারের মধ্যে মহিষাসুরমর্দিনির গোটা রুপটি সাজিয়ে তোলেন। শুধু তাই নয়, শিল্পী দেবপ্রসাদের বানানো মূর্তি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ফ্রান্স , ইতালির মত বিদেশের মাটিতেও বহুল চর্চিত।
শখে নিজের বাড়ির পূজিত দেবী লক্ষ্মী সরস্বতীর মূর্তিও নিজের হাতে গড়ে সাজিয়ে তোলেন দেবপ্রসাদ। ঘরের আনাচে-কানাচে ক্যানভাসে শিল্পী দেবপ্রসাদের আঁকা এক টুকরো প্রকৃতির মুহূর্ত নজর কাড়ে। তার সাথে সাথে রামায়ণ , আদিম মানুষ , শকুন্তলা আবার জুরাসিক ওয়ার্ল্ড এর উপর গবেষণা করে সিরিজ বানিয়ে প্রদর্শনীর আকারে নিজেই উপস্থাপন করেন। শিল্পী দেবপ্রসাদ মজুমদারের কৃতিত্বে বহু ছাত্র-ছাত্রী তার কাছ থেকে প্রতিমুহূর্তে শিখছেন। এ বছরে তার এই অভিনব দুর্গা মূর্তি দেখতে বাড়িতে ভিড় জমছে এলাকাবাসীদের।
0 মন্তব্যসমূহ
thanks