মুক্তধারার আলোচনাসত্রে কালামের অধ্যাত্মচেতনা

muktadhara
দ্বিজেন্দ্রমঞ্চে ‘মুক্তধারা’-র অনুষ্ঠান



দীপাঞ্জন দে: নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরের সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষদের সামনে সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘মুক্তধারা’ প্রতিবারই কোনো না কোনো নতুন বিষয়ে আলোচনাসত্র হাজির করে। ‘মুক্তধারা’-র ৪৬তম আলোচনাসত্রের বিষয় ছিল ‘বিজ্ঞানী এ.পি.জে. আব্দুল কালামের অধ্যাত্মচেতনা’। বিষয়টি প্রথম থেকেই অনেকের মনোহরণ করে। 

২৭ মে ২০২৩ (শনিবার) কৃষ্ণনগর পৌরসভার দ্বিজেন্দ্রমঞ্চে ‘মুক্তধারা’-র পক্ষ থেকে এই আলোচনাসত্রের আয়োজন করা হয়েছিল। তাদের এবারের আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক রতনকুমার নাথ। এই প্রথম তিনি মুক্তধারার মঞ্চে বক্তব্য রাখলেন, তাও আবার এমন একটি বিষয়ে। ‘মুক্তধারা’-র ৪৬তম আলোচনাসত্র আরেকটি কারণেও বিশেষ হয়ে রইল। এদিন সভামঞ্চ থেকে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হল।



আলোচনাসত্র শুরু হয় সন্ধে ৬টায়। প্রথমে একটি উদ্বোধন সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট কবি রামকৃষ্ণ দে। তাঁর কণ্ঠে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসংগীত “তাই তোমার আনন্দ আমার পর

তুমি তাই এসেছ নীচে।

আমায় নইলে ত্রিভুবনেশ্বর,

তোমার প্রেম হত যে মিছে।” এরপরেই হয় গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠান। মুক্তধারার অন্যতম আহ্বায়ক সম্পদনারায়ণ ধর লেখকের সঙ্গে সকলের পরিচয় করিয়ে দেন। লেখক বিদ্যুৎ কুমার সেনকে মঞ্চে ডাকা হয়। তাঁর গ্রন্থটির নাম ‘ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা নক্‌শা-সাহিত্য (১৮০১-১৮৭৫)’। বিশিষ্ট প্রবীণ শংকরেশ্বর দত্ত, শিবনাথ চৌধুরী ও দেবাশিষ মণ্ডলের হাত দিয়ে গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।



গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠান শেষ হলে সঞ্চালক দীপাঞ্জন দে এদিনের আলোচকের সঙ্গে সকলের পরিচয় করিয়ে দেন। শুরু হয় ‘বিজ্ঞানী এ.পি.জে. আব্দুল কালামের অধ্যাত্মচেতনা’ বিষয়ে রতনকুমার নাথের বক্তব্য। এক ঘন্টার আলোচনায় বক্তা এ.পি.জে. আব্দুল কালামের জীবনের একাধিক অধ্যায় নিয়ে চর্চা করেন। তাঁর গ্রামের পরিচয়, জন্মগ্রহণ থেকে শুরু করে কালামের জীবন সংগ্রাম, তাঁর উপর পিতা মাতা, পরিজন, গুরুদের প্রভাব, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হওয়া এবং তারপর ভারতের রাষ্ট্রপতি পদ— কালামের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের কথা আলোচনায় উঠে আসে। আর একজন মহান বিজ্ঞানী কিভাবে প্রকৃত অধ্যাত্মচেতনার সাক্ষী হয়েছিলেন, সে সম্পর্কেও আলোচক এ দিন নিজের সুচিন্তিত গবেষণালব্ধ মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন। মুক্তধারার দর্শক-শ্রোতা বন্ধুরা এদিন এক অভিনব বিষয়ে আলোচনা শোনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন বলেই মনে হয়।

লেখক: আহ্বায়ক, মুক্তধারা।